নিজস্ব প্রতিবেদক: ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর ছোটভাই জাহেদুল ফারুক দ্বীপ ওরফে দর্পণ দ্বীপ (৩৫) ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করেছেন। লাইভে ফ্যানের সঙ্গে রশি ঝুলানো এবং নিচে চেয়ার দেখা যায়। বৃহস্পতিবার রাতে ২ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড লাইভে তিনি চুপ করে হাঁটাচলা করে এর পর লাইভ অফ করে দেন। সবশেষে ফেসবুকে “বাই” লিখে তিনি আত্মহত্যা করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান মসজিদে দ্বীপের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর সেই কবরস্থানেই দাদির কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আদাবর থানার ওসি কাউসার আহমেদ বলেন, ভোরে তিনি মোহাম্মদপুরের শেখেরটেকের ৬নং রোডের নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন।
দ্বীপের বাবার উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি বলেন, দ্বীপ স্ত্রী আর ছেলেকে নিয়ে আলাদা থাকত। অনেক দিন থেকেই সে হতাশায় ভুগছিল। জীবনে আশানুরূপ উন্নতি না করার কারণে তার মধ্যে এই হতাশা তৈরি হয়। ছেলের এই মানসিক সমস্যার কথা বাবা জানতেন।
ওসি বলেন, শেখেরটেকের একটি বাসায় স্ত্রী ডলি ও সাড়ে চার বছর বয়সী ছেলে অংশকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন দ্বীপ। ভোরে তার আত্মহত্যার খবর শুনে সেখানে যায় পুলিশের একটি টিম। সরেজমিন ঘরের সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকতে দেখা যায় দর্পণকে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, আমরা সেখান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠাই। এর পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পোস্টমর্টেম শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরেই তার পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
অনেক দিন ধরেই মিউজিকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন দ্বীপ। শেখেরটেকের ওই বাসায় নিজের একটি স্টুডিও ছিল দ্বীপের। সেখানেই তিনি গানের চর্চা এবং নাটক ও টেলিছবির আবহ সংগীতের কাজও করতেন।
কিছুদিন আগে দ্বীপের “ভালবাসি তোমায়” গানটি প্রকাশিত হয়েছে। গানটিতে ভালো সাড়াও পেয়েছিলেন তিনি। ভাই অপূর্ব অভিনীত অনেক নাটকেরও আবহ তৈরি করেছেন তিনি। তিনি আইটি প্রতিষ্ঠান টমেটো ওয়েবেও চাকরি করতেন।
ছোটপর্দার জনপ্রিয় নায়ক জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ভাইকে দাফন করে এসে বলেন, দ্বীপের সঙ্গে এবার রমজান মাসে একবার দেখা হয়েছিল। আমার বাসায় একসঙ্গে ইফতার করেছিলাম। ঈদের দিন কিংবা ঈদের পরে ও আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেনি। শুনেছি, গতকাল রাতে ও অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল। এর পর নিজের স্টুডিওতে গিয়ে ঢোকে।
অপূর্ব বলেন, “দ্বীপ সাত বছর আগে বিয়ে করেছে। তখন থেকেই ও আলাদা থাকছে। ওর স্ত্রী এখন সাড়ে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আত্মহত্যার আগে দ্বীপ একটি চিরকুট লিখে গেছে। তাতে লেখা ছিল- “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। অংশ (দ্বীপের ছেলে), আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।” দ্বীপের মৃত্যু আমাদের পরিবারের জন্য বিরাট ধাক্কা।”
চার ভাই এক বোনের মধ্যে দ্বীপ ছিল সবার ছোট। সবার বড় আব্বাস ফারুক স্বপন এবং মেজ জিয়াউল ফারুক অপূর্ব।
ফেসবুকে লাইভ ভিডিওটি পাবলিক করা নেই। শুধু তার বন্ধু তালিকায় থাকা ফ্রেন্ডরা দেখতে পাবেন- https://www.facebook.com/dip007/videos/2009806839125053/ এই ঠিকানায়।