নিজস্ব প্রতিবেদক: "শেয়ারবাজার ঠিক করো, নইলে বুকে গুলি করো"-এমন স্লোগান সংবলিত ব্যানার নিয়ে মঙ্গলবারও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরেই ডিএসইর সামনে বিনিয়োগকারীদের এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন চলছে।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধন থেকে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের পদত্যাগ অথবা অপসারণ দাবি করছেন।
চলতি সপ্তাহের আগের দুই কার্যদিবসের মতো মঙ্গলবারও দুপুর আড়াইটার কিছু আগে ব্রোকারেজ হাউজ থেকে বের হয়ে ডিএসইর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করলেও এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য সূচক বাড়লেও দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। ফলে দুই মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এ বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিনিয়োগকারীরা আগের মতোই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, কমিশনার এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা বলেন, শুটকির দোকানে যদি বিড়াল পাহারাদার হয়, তাহলে লাভ তো দূরের কথা, পুঁজিই টিকবে না। আমাদের পুঁজিবাজারের অবস্থাও তাই হয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন তার স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যস্ত রয়েছেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে তিনি কোনো কাজই করছেন না। এমন চেয়ারম্যান দিয়ে পুঁজিবাজার ঠিক হবে না। তাই বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে খায়রুল হোসেনকে পদত্যাগ করতে হবে অথবা তাকে অপসারণ করতে হবে।
এদিকে "শেয়ার বাজার ঠিক করো নইলে বুকে গুলি করো," ব্যানারে এমন স্লোগান লেখার বিষয়ে জানতে চাইলে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। প্রতিনিয়ত পুঁজি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হচ্ছি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, বাজার ঠিক না হলে আমাদের সামনে আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকবে না। তাই ব্যানারে এমন স্লোগান লিখতে আমরা বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের পদত্যাগসহ বেশকিছু দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু কেউ আমাদের কোনো দাবি মানছে না। বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন বিনিয়োগকারীদের পক্ষে না থেকে ইস্যুয়ারের (কোম্পানি) দালালি করছেন। এই চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে শেয়ারবাজার ভালো করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে শেয়ারবাজার। ২০১০ সালে যারা বাজার থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছিল, তারা আবার সক্রিয়। টানা দরপতনের পর আজ সূচক কিছুটা উঠেছে। কিন্তু লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে গেছে। এটা কিছুতেই স্বাভাবিক বাজার হতে পারে না।