নিজস্ব প্রতিবেদক: গত এক বছরে এইচআইভি-এইডসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মারা গেছেন ১৪১ জন। এ সময়ে ১ হাজার ৩৮৩ জনের শরীরে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। দেশে বর্তমানে এইচআইভি এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি। তবে চিকিৎসার আওতায় এসেছে মাত্র আট হাজার ৩৩ জন।
আজ মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতীয় এইডস নিয়ন্ত্রণ-এসটিডি কর্মসূচির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও সারা দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো সারা বিশ্বের ঐক্য, এইডস প্রতিরোধে সবাই নেব দায়িত্ব’। ইউএনএইডস, ইউএনএফপিএ, ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সেভ দ্য চিলড্রেন ও আইসিডিডিআর, বি-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় এইডস নিয়ন্ত্রণ-এসটিডি কর্মসূচি।
আলোচনাসভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (টিবি-এল অ্যান্ড এএসপি) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম জানান, নতুন আক্রান্ত ৬৫৮ জন পজিটিভ রোগীর মধ্যে পুরুষ ৭৬ শতাংশ, নারী ২১ শতাংশ ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী তিন শতাংশ। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২১৮ জন, চট্টগ্রামে ১২৭ জন, খুলনা বিভাগে ৬৪ জন, সিলেট বিভাগে ৪৫ জন, বরিশাল বিভাগে ২৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন ও রংপুর বিভাগে ১৫ জন রয়েছেন।
ডা. শামিউল ইসলাম জানান, নতুন আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে ১২.২৪ শতাংশ, ২৫ থেকে ৪৯ বছররের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৪.২০ শতাংশ, ১৯ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে ৮.৮৫ শতাংশ, ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে ২.০৭ শতাংশ। ছয় থেকে নয় বছরের মধ্যে ০.৭৫ শতাংশ। এবং শূন্য থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ১.৮৮ শতাংশ।
আক্রান্তদের মধ্যে বিবাহিতরাই সবচেয়ে বেশি। এদের সংখ্যা ৭০.০৬ শতাংশ। অবিবাহিতদের সংখ্যা ২৩.১৬ শতাংশ।
তিনি আরো জানান, ২০২০ সালে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ লাখ। এবছর করোনার কারণে নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে। এর আগের বছর নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৩৩ লাখের বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে এখনও সাধারণ জনগণের মধ্যে সংক্রমণের হার ০.০১ শতাংশের নিচে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী যেমন শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, সমকামী ও হিজড়াদের মধ্যে সংক্রমণের হার দুই শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। যা আগে ২৫ শতাংশের উপরে ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর বিশ্ব পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে বিশ্বের মোট এইডস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে এক কোটি ৮০ লাখ। মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ৯০ হাজার মানুষের। এদের মধ্যে চিকিৎসার আওতায় এসেছে দুই কোটি ৫০ লাখের কিছু বেশি।