নিজস্ব প্রতিবেদক: রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হাতে না থাকলে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হতো না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলেন, রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উবারের মতো ব্যবহার করা হবে। প্রয়োজনের সময় তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে বলা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ‘রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র : অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ' শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা। রেন্টালের জন্য 'উবার মডেল' চালুর ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, '২৮ ডলারে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। বিশ্বে জ্বালানি নিয়ে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। তাই তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও রাখতে হবে। তেল, কয়লা, গ্যাস, নবায়যোগ্যসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সব ধরনের জ্বালানির মিশ্রণ রাখতে হবে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন এফইআরবি ও বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন (বিইপপা) যৌথভাবে মঙ্গলবার অনলাইনে এ সংলাপের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক মুস্তাফা কে মুজেরি সংলাপে মূল নিবন্ধন উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ লোডশেডিং পরিস্থিতির মধ্যেই ২০০৯ সালে সরকার রেন্টাল চালু করে। দ্রুত সুফলও পাওয়া যায়। তাতে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৫ শতাংশের কম রেন্টাল। এগুলোর কৌশলগত ব্যবহার নিয়ে কাজ করতে হবে। এসব কেন্দ্রের খরচ ও সুবিধা পর্যালোচনা করা লাগবে।’
রেন্টাল বিদ্যুকেন্দ্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘তেল, কয়লার মতো গ্যাসও এখন আমদানি করতে হচ্ছে। যে কোনো জ্বালানি সংকট হতে পারে, তাই সবই রাখতে হবে। দেশে এখন বিদ্যুতের কোনো বাড়তি সক্ষমতা নেই। বরং ক্যাপটিভের (শিল্পে নিজস্ব উৎপাদিত বিদ্যুৎ) চাহিদা গ্রিডে এলে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হবে।’
তবে রেন্টাল ধরে রাখার কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘শুরুর প্রেক্ষাপটে রেন্টাল যৌক্তিক ছিল। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। সময় এসেছে প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার। বিদ্যুতের অতিরিক্ত সক্ষমতা সরকারের দায় বাড়াচ্ছে। সব রেন্টালের অবসায়ন দরকার।’
বিইপপার সহ-সভাপতি নাভিদুল হক বলেন, ‘পুরোনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র দিয়ে রেন্টাল করার প্রচলন থাকলেও বাংনাদেশে সব নতুন কেন্দ্র করা হয়েছে। এগুলো দেশের সম্পদ। তাই 'বিদ্যুৎ নেই, বিল নেই' এমন চুক্তির আওতায় মেয়াদ বাড়িয়ে সরকারও এখান থেকে লাভবান হতে পারে।'’
সংলাপ সঞ্চালনা করেন এফইআরবির নির্বাহী পরিচালক শামীম জাহাঙ্গীর। শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানান বিইপপার সভাপতি ইমরানুল করিম ও এফইআরবির চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকার।