নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (কেপিসিএল) দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার খবরে গত মে ও জুন মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা প্রায় সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছিল। গত ৩০ এপ্রিল, ২০২১ শেষে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ৯.২ শতাংশ। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ০.৩০ শতাংশ। যা ৩০ মে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে দাঁড়ায় ১.৬৫ শতাংশে। আর বিদেশি বিনিয়োগ কমে দাঁড়ায় ০.০২ শতাংশে।
পরের মাসে কোম্পানিটিতে তাদের শেয়ার আরও কমে যায়। ৩০ জুন তারিখে কোম্পানির মোট শেয়ারের মাত্র ০.৫২ শতাংশ থাকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আরও অর্ধেক শেয়ার বিক্রি করে দেয়। ৩০ জুন তারিখে কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল মাত্র ০.০১ শতাংশ।
তবে জুলাইতে কেপিসিএলের বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি নবায়নের খবর বাজারে আসতে থাকলে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ার বাড়াতে থাকে। ৩১ জুলাই, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৮.৪৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ধারণ করে। অর্থাৎ জুন মাসে থাকা ০.৫২ শতাংশ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার জুলাই মাসে বেড়ে দাঁড়ায় ৮.৪৫ শতাংশে। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ার ০.০১ শতাংশ থেকে ০.২১ শতাংশে বৃদ্ধি করে।
এই হিসাবে জুলাই মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির ৩ কোটি ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৬৫টি শেয়ার কিনেছে। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কিনেছে ৭ লাখ ৯৪ হাজার ৮২৬টি শেয়ার।
আগস্টে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা আরও ১১ লাখ ৫২ হাজার ৪৯৮টি শেয়ার কিনেছে। ওই মাসে কোম্পানিটিতে তাদের শেয়ার ৮.৪৫ শতাংশ থেকে ৮.৭৪ শতাংশে উন্নীত হয়।
সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিযোগকারীদের শেয়ার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৯.৫৯ শতাংশে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে মোট শেয়ারের আরও ০.৮৫ শতাংশ শেয়ার কিনে তারা। এই মাসে তারা কিনে ৩৩ লাখ ৭৮ হাজার ১২টি শেয়ার।
এতে দেখা যায়, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর-এই তিন মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কেপিসিএলের মোট শেয়ার কিনেছে ৩ কোটি ৬০ ৪৫ হাজার ৩৭০টি। যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৯.৫৯ শতাংশ।
কবে হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধির চুক্তি
বেসরকারি খাতে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে সরকার সংশ্লিষ্ট আইনটির মেয়াদ গত ১৬ সেপ্টেম্বর ৫ বছর বাড়িয়েছে। এরপর বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটির মেয়াদ বৃদ্ধির আলোচনা শুরু হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে ইতোমধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে। তবে আলোচনা চুড়ান্ত হয়নি। আগামী সপ্তাহে আরও একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)’র এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেয়ারনিউজকে বলেন, সংসদে আইনটি পাশ হওয়ার আগে কোম্পানিটি যেকোন শর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত ছিল। কিন্তু আইনটি পাশ হওয়ার পর এখন বিভিন্ন শর্ত আরোপ করতে চাইছে। এখন কোম্পানিটি ক্যাপাসিটি চার্জ দাবি করছে। আবার প্রতি মাসে ন্যুনতম বিদ্যুৎ কেনার গ্যারান্টিও চাইছে।
তিনি জানান, ‘কোম্পানিটির শর্ত নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা এক দফা বৈঠক করেছি। আগামী সপ্তাহে আরও একটি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই বৈঠকে চুক্তির অন্যান্য শর্তা চুড়ান্ত করা হতে পারে।’
জানা গেছে, বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি মূল্য বা ট্যারিফ হার নিয়েও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। ক্যাপাসিটি চার্জ না থাকলে ট্যারিফ বেশি দাবি করেছে কোম্পানিটি।
কেপিসিএল ছাড়াও আরও তিনটি কোম্পানির তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে আলোচনা চলছে। এরমধ্যে দুটি কোম্পানি হলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সামিট পাওয়ারের একটি এবং ওরিয়ন ফার্মার মালিকানাধীন দুটি।