ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
Sharenews24

শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের বার্তা

২০২৩ আগস্ট ১৯ ১৬:৪৪:২৭
শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের বার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে একাধিক মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের পক্ষে নয় ভারত। এক কূটনৈতিক বার্তায় বাংলাদেশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে নয়াদিল্লি।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার দুর্বল হলে তা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কারও জন্যই সুখকর হবে না জানিয়ে ওই কূটনৈতিক বার্তায় নয়াদিল্লি বলেছে, ওয়াশিংটনের মতো তারাও চায় বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক। কিন্তু যেভাবে শেখ হাসিনা সরকারকে অস্থির করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে, তা প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয়।

ভারতের সঙ্গে দীর্ঘতম স্থলসীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের। নয়াদিল্লি এ কথাই বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছে, জামায়াতকে আশকারা দিলে একদিকে যেমন ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে, তেমনই চীনের প্রভাব বাংলাদেশে অনেকটাই বেড়ে যাবে, যা ওয়াশিংটনও চায় না।

মনে করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র জামায়াতকে বরাবর রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসেবেই দেখানোর চেষ্টা করে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল দিল্লি ঘুরে যাওয়ার পরই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ভারতীয় প্রশাসনের।

শুধু বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন।

এই ভিসানীতি বাস্তবায়ন আদৌ উচিত হবে না বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন যারা বানচাল করার চেষ্টা করবে, নতুন এই ভিসানীতির ফলে তারা আমেরিকায় ঢুকতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ জানা গেছে।

মার্কিন প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে নতুন এই ভিসানীতি গ্রহণ করেছে। এমনটিই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

বাংলাদেশের জন্মের সময় থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মসৃণ থেকেছে জানিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, যখনই সে দেশে অন্য কোনো সরকার ক্ষমতায় এসেছে, দুই দেশের সম্পর্ক ততটা মসৃণ থাকেনি। তাই ভারত সব সময়ই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকারকে গুরুত্ব দেয়।

উৎপল মনে করেন, ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকার দেখতে চায় ভারত। কারণ, ভারত মনে করে, আওয়ামী লীগের সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকলে দুই দেশের সীমান্ত আপাতদৃষ্টিতে সুরক্ষিত থাকে।

আগামী সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লিতে জি ২০-র বৈঠক শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সেখানে আসবেন।

এই বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন এবং উপমহাদেশের ভূরাজনীতি নিয়ে সমান্তরাল বৈঠক হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। ভারত জি ২০-র মঞ্চকে এ বিষয়ে আলোচনার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।

ভারতের কূটনৈতিক মহল বলছে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ভারতের উত্তরপূর্ব সীমান্ত অঞ্চল বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে। তালেবান এখন আফগানিস্তানের ক্ষমতার শীর্ষে।

মনে করা হচ্ছে, আফগানিস্তানের নারী, শিশু এবং সংখ্যালঘুদের কথা বিবেচনা না করেই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে চুক্তি করে নিয়েছিল, এখন যার ফল ভুগতে হচ্ছে।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি সফরে গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তথা কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেখানে তারাও বার্তা দিয়েছেন, আঞ্চলিক স্থিতি বজায় রাখার প্রশ্নে বিএনপি-জামায়াত জোট বিপজ্জনক। প্রতিনিধি দলের নেতা কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে একটি ইতিবাচক বৈঠক করেছেন।

শেয়ারনিউজ, ১৯ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে