নিজস্ব প্রতিবেদক: শীতকালে আমরা নিজেকে উষ্ণ রাখতে গরম কাপড় পরি। আবার অনেকে চা-কফির মাত্রাও বাড়িয়ে দেন। কেউ কেউ ঘর গরম রাখতে হিটারও ব্যবহার করেন।
আবহাওয়ার তাপমাত্রা কমে যাওয়া এবং ঠান্ডা বাতাস শীতকালে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করেছে। এই সময়ে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখার একটি কার্যকর উপায় হল তাপ উৎপন্নকারী খাবার খাওয়া।
চর্বি, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং অন্যান্য খাবারের তুলনায় বেশি তাপ উৎপন্ন করে। এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা বিশেষ করে ঠান্ডা ঋতুতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক পুষ্টি বাড়াতে ডায়েটে কিছু খাবার যোগ করার পরামর্শ দেন।
ভারতীয় পুষ্টিবিদ রূপালী দত্ত বলেছেন যে একজন ব্যক্তি কী খান তা শীতকালে বাইরের ঠান্ডার সাথে লড়াই করার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার আছে যা প্রাকৃতিকভাবে শরীরে তাপ তৈরি করতে পারে। এই খাবারগুলো আমাদের ভেতর থেকে গরম করে এবং তাপীয় খাবার হিসেবে পরিচিত।
"যে খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে তা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় এবং আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে," তিনি বলেন।
ভারতীয় খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ পূজা মাখিজা এমন কিছু খাবারের নাম দিয়েছেন যা শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখে। সেই খাবারগুলো হলো-
লাল মাংস : গরুর মাংস বা মাটনের মতো লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা সম্পূর্ণ শরীরে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে এবং উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। তিনি উল্লেখ করেছেন, যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম সেসব লোকেদের হাত-পা ঠাণ্ডা হওয়ার প্রবণতা রয়েছে এবং তাদের প্রতিদিনের আয়রন সেবনের মাত্রা বাড়াতে হবে।
মূল জাতীয় সবজি : মূল জাতীয় খাবার হজমে অনেক বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়, ফলে শরীরে তাপ উৎপন্ন হয়। মূল জাতীয় খাবার যেমন: আলু, বিট, গাজর ইত্যাদি শীতকালের আবহাওয়া সামলাতে কার্যকরী।
কড়া গন্ধযুক্ত খাবার, যেমন- পেঁয়াজ, পেঁয়াজের কলি, পেঁয়াজের পাতা ইত্যাদি খাবার এই সময়ের খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন।
পুষ্টিবিদ পূজা মিাখিজা বলেন, যেসব মূল জাতীয় শাকসবজি হজম হতে বেশি সময় নেয়, সেসব খাবার শক্তি উৎপন্ন করে। তাই একজন মানুষকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
মসলা : শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে মসলা একটি কার্যকর উপাদান। যেহেতু আমাদের রন্ধনপ্রণালিতে মসলার ব্যবহার বেশি, তাই এটি সহজেই আমাদের দৈনন্দিন খাবারে মিশে যায়। শরীর উষ্ণ রাখতে পারে যেসব মসলা, তার মধ্যে আছে আদা, জিরা, গোলমরিচ ও দারুচিনি।
রান্নার মসলার বাইরেও চা ও স্যুপে আদা ব্যবহার করে খাওয়া যায়। জিরা দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনার খাবারে জিরা যোগ করতে পারেন।