নিজস্ব প্রতিবেদক: এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ ও আপত্তিকর ছবি ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় কলেজের এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার মুরাদুজ্জামান মুকুল (৪৮) নামে ওই প্রভাষককে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওইদিন ধুনট সদরের পশ্চিম ভরণশাহী এলাকা থেকে মুরাদুজ্জামান মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুরাদুজ্জামান উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের শৈলমারি গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক। আজ শুক্রবার সকালের দিকে ধুনট থানা থেকে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মুরাদুজ্জামান ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে ধুনট পৌর এলাকার দক্ষিণ অফিসারপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নেন। সেখানে স্ত্রী, কন্যা ও দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন।
জানা যায়, মুরাদুজ্জামান মুকুল যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, ওই বাসার মালিকের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাসার মালিক ও তাঁর স্ত্রী দুজনই চাকুরী করেন। পেশাগত কারণে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা উভয়ই কর্মস্থলে থাকেন।
এদিকে, মুরাদুজ্জামান মুকলের স্ত্রীও চাকুরি করেন। তিনি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ফলে তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় স্কুলে থাকেন। এই সুযোগে মুরাদুজ্জামান কৌশলে ওই স্কুলছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন।
ছবি তুলেই ক্ষান্ত হননি মুরাদুজ্জামান মুকুল। সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৩ মার্চ বেলা ১১টার দিকে ওই ছাত্রীকে নিজের ঘরে এনে ধর্ষণ করেন। এই সময় ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ধারণ করেন মুরাদুজ্জামান।
তারপর সেসব ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বলেন। আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছাত্রীকে এর মধ্যে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করেন মুরাদুজ্জামান মুকুল।
মুরাদুজ্জামান মুকুল সর্বশেষ ১২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তখন স্কুলছাত্রীর চিৎকারে স্বজনেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে মুরাদুজ্জামান মুকুল বাসা থেকে পালিয়ে যান। পরে মুরাদুজ্জামানের পরিবারকে বাসা থেকে বের করে দেন ওই ছাত্রীর মা-বাবা।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন মুরাদুজ্জামান। পরে স্কুলছাত্রী তাঁর বাবা-মাকে পুরো বিষয়টি জানিয়ে দেন। স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মুরাদুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের সময় আপত্তিকর ছবি ধারণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন মুরাদুজ্জামান মুকুল। স্কুলছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) পাঠানো হয়েছে। বগুড়া আদালতে ভুক্তভোগীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।’