নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) অবশেষে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
শনিবার (১৪ মে) সকালের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা।
এর আগে পি কে হালদার ও তার সহযোগী সুকুমার মৃধার বিপুল সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। এই বিষয়ে শেয়ারনিউজ সহ কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল শুক্রবার খবরও প্রকাশ করে।
নিউজ পোর্টালগুলো জানায়, শুক্রবার পি কে হালদারের খোঁজে দিনভর কলকাতাসহ অন্তত ১০ জায়গায় অভিযান চালায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
শুক্রবার দিনভর এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় সন্ধান করা হয় তার বিপুল সম্পদেরও। তবে এদিন তাকে গ্রেপ্তার অভিযান ব্যর্থ হয়।
পি কে হালদার শিবশঙ্কর নামে ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে ইডি।
ভারতে গোয়েন্দা সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে ১০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে পি কে হালদারকে ধরতে অভিযান চালানো হয়।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, সেই জালিয়াতির টাকা আবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শেল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হতো। জালিয়াতির টাকায় কলকাতাসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট কেনা হয়।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের জালিয়াতচক্রের সঙ্গে যুক্ত অভিযোগে উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরের সুকুমার মৃধা নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর নাম ইডির তদন্তে উঠে আসে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশে এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটানো হয়। এই চক্রের প্রধান পি কে হালদার। তাকে সহযোগিতা করতেন প্রণব কুমার হালদার ও প্রীতিশ কুমার হালদার।
কলকাতার কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৯ সালে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির পর ভারতে পালিয়ে গিয়ে শিবশঙ্কর হালদার নামে পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট গ্রহণ করেন পি কে হালদার। তাকে সাহায্য করেন অশোকনগরের সুকুমার মৃধা।
ইডির তদন্তকারীরাও বলছেন, সুকুমারের সঙ্গে পি কের দীর্ঘদিনের পরিচয়। বাংলাদেশ থেকে জালিয়াতি করে পাওয়া টাকা পশ্চিমবঙ্গে নিতে মাছ ব্যবসার আড়ালে পি কে হালদারকে সাহায্য করতেন এই সুকুমার।
সুকুমার মৃধার বাড়িতে তার জামাতা সঞ্জীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। এ ছাড়া প্রণব কুমার হালদারের দুই ছেলেকেও জেরা করে ইডি। অভিযানে বেশ কিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।