আজ লেনদেনের শুরুতে দেখা গেল ইতিবাচক প্রবণতা। তারপর টানা পতন। মাত্র ১২ মিনিটের মাথায় (১০টা ১২ মিনিটে) ৭৯ পয়েন্ট গায়েব। তারপর ২০ মিনিটের মধ্যে (১০টা ৩২ মিনিটে) সেই ৭৯ পয়েন্ট কভার করে ফের ইতিবাচক প্রবণতায় মোড়। কিছুক্ষণ পরই আবারও পতন। ২৫ মিনিটের মাথায় (১০টা ৫৮ মিনিটে) ফের ৮৩ পয়েন্ট গায়েব। তারপর দুপুর সোয়া ১২টায় পতন নেমে আসে ৪০ পয়েন্টের নিচে।
এই অবস্থা চলে প্রায় আধা ঘন্টা। তারপর সূচক আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়। দুপুর সোয়া ১টায় সূচক আগেরদিনের চেয়ে ২২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তারপর আবার পেছনে হাঁটতে থাকে। যা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। আজ লেনদেন শেষ হয় প্রায় ৫২ পয়েন্ট পতন দিয়ে।
চলতি সপ্তাহের চার কর্মদিবসের প্রতিদিনই সূচক কমেছে। এই চারদিনে তিন’শ পয়েন্টেরও বেশি সূচক কমেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স।
এই পতনের মধ্য দিয়ে সূচকের অবস্থান নেমে গেল ১০ মাস আগে ২০২১ সালের ১২ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্নে। সেদিন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২০৮ পয়েন্ট।
বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৮ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৫৬৫ পয়েন্ট। অর্থাৎ এক সপ্তাহে কমেছে সূচক কমেছে ৩০৭ পয়েন্ট।
চলতি সপ্তাহের রোববার বুদ্ধ পুর্ণিমার বন্ধের পর প্রথম কর্মদিবস সোমবার ১৩৪ পয়েন্ট সূচক পতনের পর তিন দিনের প্রতিদিনই বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেনি। প্রতিদিনেই সূচক কমেছে। আজ সূচক কমেছে সপ্তাহের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর সাত মিনিটের মাথায় সূচক বেড়ে গিয়েছিল ৫৪ পয়েন্ট। তারপর মধ্যভাগে ১১২ পয়েন্ট কমে যায়। তখন বাজারজুড়ে আতঙ্ক ভর করে। তারপর শেষ বেলার ক্রয়চাপে ২৭ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ করে সেদিনের লেনদেন।
তৃতীয় কর্মদিবস বুধবারও দেখা যায় একই প্রবণতা। লেনদেন শুরু হয় ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সূচক কমে যায় ৯৩ পয়েন্ট।
আজ বৃহস্পতিবারও লেনদেনের শুরুতে ৭৯ পয়েন্ট হারিয়ে সূচক আবার ২৪ পয়েন্ট যোগ হয়। তারপর আবার ৮৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৫২ পয়েন্টে শেষ হয়। অর্থাৎ প্রতিদিনই সূচকের কিছুটা উত্থান। তারপর বড় পতনের হোছট।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারের এই ভয়াবহ অস্থিরতায় বিনিয়োগকারীদের ব্লাডপ্রেসার বাড়ছে। শেয়ারবাজারে এখন এমন কোন বিনিয়োগকারী নেই, যার প্রেসার বাড়ছে না, রক্তক্ষরণ বাড়ছে না।
বৃহস্পতিবারের বাজার চিত্র:
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আজ প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১.৬৬ পয়েন্ট বা ০.৮১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৮.২৪ পয়েন্টে।
ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৮.৪৬ পয়েন্ট বা ০.৬০ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৯.৮০ পয়েন্ট বা ০.৮৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৮৩.০৪ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩১৬.৬৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৬৬৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৯৪ কোটি ৫ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৭৬২ কোটি ৯৩ লাখ টাকার।
ডিএসইতে আজ ৩৮০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৭টির বা ১৭.৬৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ২৬৩টির বা ৬৯.২১ শতাংশের এবং ৫০টির বা ১৩.১৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১৩৫.৪৩ পয়েন্ট বা ০.৭২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৩৯.৭২ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫৪টির, কমেছে ২০৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির দর। আজ সিএসইতে ২৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।