নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নসংক্রান্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ব্যাংক লেনদেনকে সন্দেহজনকভাবে শনাক্ত করেছে বিএফআইইউ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এমন চিত্র ধরা পড়েছে বলে বিএফআইইউ’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গিয়ে গ্রাহকের সোয়া ২ কোটির বেশি আর্থিক লেনদেন (সিটিআর) যাচাই-বাছাই করা হয়।
এক্ষেত্রে অর্থ পাচার ছাড়াও মোট ২৭টি ক্যাটাগরিতে এসব লেনদেনে অপরাধ সংঘটিত হতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়েছে।
তবে বিস্তারিত তদন্ত শেষে সুনির্দিষ্টভাবে যেসব লেনদেনে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ মিলবে সেসব লেনদেনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এই রকম নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট তদন্ত সংস্থাগুলোকে।
অর্থ পাচার নিয়ে দেশের সর্বত্র এখন আলোচনার ঝড় বাইছে। সম্প্রতি তথ্য বেরিয়েছে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পাহাড় জমেছে।
মাত্র ১২ মাসে সেখানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ জমা করেছেন বাংলাদেশিরা। সব মিলিয়ে সুইস ব্যাংকে এখন বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ ৮ হাজার ২৭৫ কোটি, যা এই যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
একই সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দেওয়ার ঘোষণা নিয়ে সংসদেও নানা উত্তাপ ছড়িয়েছে। রীতিমতো বিরোধী দলগুলোর তোপের মুখে পড়ে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রমতে, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ২০২১-২২ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২ কোটি ৩২ লাখ ১৭ হাজার ৩১৫টি নগদ লেনদেন রিপোর্ট (সিটিআর) বিএফআইইউতে পাঠায়।
এরমধ্যে ৫ হাজার ৩১২টি লেনদেনকে সন্দেহজনক (এসটিআর) হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে।
এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৬৪৬টি লেনদেন তল্লাশির জন্য পাঠানো হয় বিএফআইইউতে।
ওই অর্থবছরে সন্দেহজনক হিসাবে ৫ হাজার ২৮০টি লেনদেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৬৭৫ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন ধরা পড়ে ৩ হাজার ৫৭৩টি।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ধারা ২-এর(য) উপধারায় সন্দেহজনক লেনদেন বলতে বোঝায় ‘যাহা স্বাভাবিক এবং সাধারণ লেনদেনের ধরন হইতে ভিন্ন বা যে লেনদেন অপরাধ হইতে অর্জিত সম্পদ বা কোনো সন্ত্রাসী কার্যে, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে বা সন্ত্রাসীকে অর্থায়ন।