নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবারও (৪ জুলাই) দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। আগের কার্যদিবসের মতো আজও লেনদেন হওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে এবং কমেছে সূচকও। তবে আগের দিনের তুলনায় আজ লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে আজ ১২ পয়েন্ট। আগের দিন রোববার সূচক কমেছিল ১৭ পয়েন্ট। অর্থবছরের দুই দিনে ডিএসইর সূচক কমলো ২৯ পয়েন্ট। তার আগেও টানা চার দিন সূচক পতনে ছিল।
তবে টানা দর হারাতে থাকা বাজারে দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানিগুলো ফের তেজ দেখাতে শুরু করেছে। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে এমন কোম্পানিগুলোর দর যেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি উৎপাদনে নেই, ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বছরের পর বছর।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারে যখন মন্দাভাব ঘনীভূত হয়, তখন দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানি মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। উৎপাদন বন্ধ, অব্যাহত লোকসানে রয়েছে এমন সব কোম্পানি যেগুলোর পরিশোধিত মূলধন কম। শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর সুযোগ থাকে। এতে দেখা যায়, শেয়ারদর বাড়লে বিনিয়োগকারীরা সেসব অখ্যাত কোম্পানির শেয়ারেই বেশি আকৃষ্ট হয়।
এমনিতেই দর সংশোধনে থাকা শেয়ারবাজারে ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য হ্রাসসহ নানা ইস্যুতে বিনিয়োগকালীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রবল। তার ওপর বাজেটে প্রত্যাশিত কোনো ঘোষণা আসেনি। আশা ছিল, বাজেট পাসের সময় অন্তত কিছু পাওয়া যাবে, কিন্তু অর্থমন্ত্রী এখানেও কোনো সুখবর রাখেননি। যে কারণে অর্থবছরের শুরুতে বিনিয়োগকারীরা বাজারে কোন সুখবর দেখছেন না।
তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থবছরের শুরুতে প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীরা বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা আরও হয়তো দুই-তিন দিন পর্যবেক্ষণে থাকতে পারেন। এছাড়া, আগামীসপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্ণর কাজ শুরু করবেন। সব মিলিয়ে এই সপ্তাহ হয়তো মিশ্র প্রবণতায় থাকতে পারে দেশের শেয়ারবাজার। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে বাজার ইতিবাচক প্রবণতায় মোড় নিতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
সোমবারের বাজার চিত্র:
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আজ ১২.৮৯ পয়েন্ট বা ০.২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৪৬.৮৮ পয়েন্টে।
ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৭.২৫ পয়েন্ট বা ০.৩১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২৮৩.৯৫ পয়েন্টে। তবে শরিয়াহ সূচক ০.৪১ পয়েন্ট বা ০.০৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৮৫.১৬ পয়েন্টে।
টাকার পরিমাণে ডিএসইতে আজ লেনদেন হয়েছে ৬৬২ কোটি ৬১ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৬৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকার।
ডিএসইতে ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৯টির বা ৩৯.১১ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ১৮২টির বা ৪৭.৭৬ শতাংশের এবং ৫০টির বা ১৩.১২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১১.৪২ পয়েন্ট বা ০.০৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৭০৯.৭৪ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৯১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১২৩টির, কমেছে ১২৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির দর। আজ সিএসইতে ২৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।