নিজস্ব প্রতিবেদক: উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের (এমআরটি-৬) লাইন কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ১.১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করা হবে। এ কারণে স্থানান্তর করতে হতে পারে ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করা নানন্দিক কমলাপুর রেলস্টেশন।
মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক থেকে এ প্রস্তাব এসেছে। কমালপুর স্টেশন স্থানান্তর করতে হবে -এ যুক্তিতে মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির বিরোধী ছিল রেলওয়ে। মেট্রোরেলের পথ বাড়বে?নাকি না কমলাপুর স্টেশন সরবে? - এ আলোচনা ছিল অনেকদিন ধরেই। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল লাইনের দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার বাড়িয়ে কমলাপুর পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। এরপর রেলও আনাপত্তি দিতে রাজি হয়েছে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, এমআরটি-৬ লাইনের শেষ স্টেশনটি হবে বিদ্যমান কমলাপুর স্টেশনের প্রবেশপথ সংলগ্ন। এতে নানন্দিক কমলাপুর স্টেশন ঢাকা পড়বে। তাই পুরো স্টেশনটিই ১৮০ মিটার উত্তরের শাহজাহানপুরের দিকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে। মঙ্গলবারের বৈঠকে রেলমন্ত্রী নুরুল সুজন, প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান বলেছেন, কমলাপুর স্টেশনকে ঘিরে 'মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব' হবে। তবে এখনই কমলাপুর স্টেশন ভাঙা হবে না। মেট্রোরেলের কাজ শেষে স্থানান্তর করা হবে। তবে একই নকশায় নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে। এতে পাঁচ থেকে ১০ বছর সময় লাগতে পারে।
সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) কমলাপুর স্টেশনকে মাল্ডিমোডালহাবে রুপান্তরে কাজ করছে জাপানি প্রতিষ্ঠান কাজিমা করপোরেশন। মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ করছে ঢাকা ম্যাস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
মেট্রোরেলের বর্ধিত অংশের নকশা অনুযায়ী, উড়াল রেলপথটি মতিঝিল থেকে সেনাকল্যাণ ভবনের সামনে দিয়ে কমলাপুর আইসিডির মোড় হয়ে স্টেশন পর্যন্ত যাবে। কিন্তু মেট্রোরেলের ট্রেন ঘুরাতে (লাইন পরিবর্তন ও শান্টিং) সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। ফলে কমলাপুর স্টেশন আড়ালে পড়ে যাবে। এ কারণে কাজিমা করপোরেশনও আপত্তি তুলেছিল মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির। একে মাল্টিমোডাল হাবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মতামত দেয়। তবে মঙ্গলবারের সভায় কাজিমা করপোরেশন প্রস্তাবিত নকশায় বিদ্যমান কমলাপুর স্টেশন ভবন উত্তরপাশে সরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে।
২০১৬ সালে শুরু হওয়া ২০.০১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেলের দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশ আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারে। বাকি অংশের কাজ পরের বছর শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত অংশের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাইকা। জাপানের সহায়তায় রাজধানীতে আরো চারটি মেট্রোরেল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে পাতালপথে একটি মেট্রোরেল এসে কমলাপুরে মিশবে।