ঢাকা, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
Sharenews24

লিগ্যাছি ফুটওয়ারের সুদ মওকুফের বিষয়ে আইনী মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত

২০২৩ আগস্ট ০৯ ২০:৩০:০৮
লিগ্যাছি ফুটওয়ারের সুদ মওকুফের বিষয়ে আইনী মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রায়াত্ব রূপালী ব্যাংকের ৫ কোটি ঋণের বিপরীতে প্রায় ২৩ কোটি টাকা সুদ মওকুপের বিষয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেডের আবেদনে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। আজ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সুদ মওকুফের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়। তবে এই বিষয়ে ব্যাংকটির আইন উপদেষ্টার মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত প্রয়োজন বলে পরিচালনা পর্ষদ মতামত ব্যক্ত করে। আইন উপদেষ্টার আইনগত মতামত প্রাপ্তির পর ব্যাংকের পরবর্তী পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।

পর্ষদ সভায় উপস্থিত ব্যাংকের এক পরিচালক শেয়ারনিউজকে বলেন, ‘লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেড শেয়ারবাজারে একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি। শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির অনুরোধকে বিবেচনায় নিয়ে বিষয়টি আমরা ইতিবাচক বিবেচনায় নিয়েছি। তবে এই বিষয়ে আমাদের আইন উপদেষ্টার মতামত প্রয়োজন। তাঁর আইনগত মতামতের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে রূপালী ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ নিয়েছিল লিগ্যাসি ফুটওয়্যার। ওই ঋণের বিপরীতে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ২০ কোটি ৩২ লাখ টাকা সুদসহ ব্যাংকটি প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি টাকা দাবি করেছিল। বর্তমানে যা সুদ-আসলে দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি টাকারও বেশি।

রূপালী ব্যাংকের ওই সুদ-আসল ঋণের দাবির প্রেক্ষিতে লিগ্যাসি ফুটওয়্যার বলেছে, কোম্পানিটি ঋণ পরিশোধ করতে ইচ্ছুক। এই জন্য কোম্পানিটি আসল ৫ কোটি টাকা পরিশোধ করার সুযোগ চায় এবং বাকি সুদ বাবদ ২৩ কোটি টাকা মওকুফ চায়।

রূপালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ি ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে বর্তমানে বেশ আন্তরিক। এরজন্য ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ পরিমাণ সুদ মওকুফ করে দিচ্ছে। যাতে ঋণ গ্রহীতারা ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে আগ্রহী হয়। কারণ আইনী প্রক্রিয়ায় গিয়ে ঋণ আদায় দীর্ঘসূত্রিতার সামিল।

এর আগে গত বছর বছরের ৬ ডিসেম্বর রূপালী ব্যাংকের সচিব ও মহাব্যবস্থাপক সাহেদুর রহমান স্বাক্ষরে একটি চিঠি শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের বরাবরে প্রেরণ করা হয়। চিঠিতে ব্যাংকটি জানায়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেড ১৯৯৬ সালে রূপালী ব্যাংকের ঢাকার রমনা কর্পোরেট শাখা হতে ৫ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ হিসাবে গ্রহণ করে। কোম্পানিটির ঋণ শ্রেণিকৃত ঋণে পরিণত হয়েছে। ওই ঋণ গত বছর সুদে-আসলে ২৫ কোটি ৩২ টাকায় উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে যা বেড়ে ২৮ কোটি টাকারও বেশি হয়েছে।

ওই পত্রের মারফত রূপালী ব্যাংক বিএসইসির চেয়ারম্যানকে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায়। চিঠিতে যারা কোম্পানির পক্ষে ঋণ গ্রহণ করেছিলেন তাদের নামও উল্লেখ করা হয়। ঋণ গ্রহণকারী পরিচালকরা হলেন :-কোম্পানির চেয়ারম্যান শাহনাজ সুলতানা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাজী রাফি আহমেদ ও পরিচালক মো. কাজী নাফিজ আহমেদ।

রূপালী ব্যাংকের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ঋণ পরিশোধের বিষয়ে করণীয় বিষয় নির্ধারণ করে কমিশনকে অবহিত করার জন্য লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের পরিচালনা পর্ষদকে নির্দেশনা দেয়।

এর প্রেক্ষিতে লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানিটির ৩ কোটি শেয়ার অভিহিত মূল্যে ইস্যু করার প্রস্তাব দেয়। কোম্পানির প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসে লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের পরিচালনা পর্ষদের অনুকূলে ৩০ কোটি টাকা মূলধন বৃদ্ধি করার জন্য ৩ কোটি শেয়ার ইস্যু করার অনুমতি দেয় বিএসইসি। তবে নতুন শেয়ার করার ক্ষেত্রে শর্তারোপ করা হয়, এই ৩০ কোটি টাকার মধ্যে ২৫ কোটি টাকায় রুপালী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বাকি ৫ কোটি টাকা কোম্পানির উৎপাদন কাজে ব্যবহার করতে হবে।

এরপর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিএসইসির চেয়ারম্যান রূপালী ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদকে অনুরোধ জানায়, তালিকাভুক্ত কোম্পানিটিকে কর্মক্ষম করার জন্য বিএসইসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এক্ষেত্রে কমিশন রূপালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদেরও সহায়তা চায়। বিএসইসি কোম্পানিটির সমুদয় সুদ মওকুফ করে ঋণের আসল টাকা অর্থাৎ ৫ কোটি টাকা নেয়ার ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ জানায়।

বিএসইসি এবং লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে রুপালী ব্যাংক সুদ মওকুফ করার একটি প্রস্তাবটি আজকের (বুধবার, ০৯ আগস্ট) সভায় প্রস্তাব আকারে উত্থাপন করে। সভায় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা প্রস্তাবটি ইতিবাচক হিসাবে আলোচনা করেন। তবে সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ব্যাংকটির আইন উপদেষ্টার আইনী মতামত গ্রহণ করা আবশ্যক বলে মনে করেন তাঁরা। তাই আইন উপদেষ্টার মতামত গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শেয়ারনিউজ, ০৯ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে