নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে এসে প্রথম দিন অভিহিত মূল্যের উপরে অবস্থান করলেও দ্বিতীয় দিন অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে যায় বহুল আলোচিত বেক্সিমকো গ্রিন সুকুকের দর। তৃতীয় দিন কাঁপুনি ধরিয়ে বন্ডটির দর অভিহিত মূল্যের সাড়ে ৮ শতাংশ নিচে নেমে যায়। আজ চতুর্থ কার্যদিবস আগের দিনের দরে দাঁড়িয়ে আছে। তবে আজ লেনদেন আরও কমেছে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, প্রথম কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) বেশ ঝাঁকঝমকভাবে বেক্সিমকো সুকুকের লেনদেন শুরু হয়। প্রথম দিন বন্ডটির লেনদেন শুরু হয় ১১০ টাকায়। তারপরই নেমে যায় ১০১ টাকায় নেমে যায়। দিনশেষে ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের সুকুকের দর স্থির হয় ১০২ টাকায়। এদিন লেনদেন হয় ৩২ লাখ ৩২ হাজার ৭৭২টি বন্ড। যার বাজার মূল্য ছিল ৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় দিন রোববার (১৬ জানুয়ারি) সুকুকটির সর্বোচ্চ দর উঠে ১০২ টাকা ৫০ পয়সায়। সর্বনিম্ন ৯৫ টাকায়। এদিন শেষ লেনদেন হয় ৯৮ টাকা ৫০ পয়সায়। প্রথম দিনের চেয়ে এদিন বন্ডটির দর কমে যায় আড়াই টাকা। এদিন লেনদেন হয় ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৪টি বন্ড। যার বাজার মূল্য ছিল ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
তৃতীয় দিন সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সুকুকটির সর্বোচ্চ দর উঠে ৯৬ টাকায় এবং সর্বনিম্ন ৯১ টাকায়। দিনশেষে ক্লোজিং দর হয় ৯১ টাকা ৫০ পয়সায়। আজ ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৮৯টি বন্ড লেনদেন হয়। যার বাজার মূল্য ৬ কোটি ১৭ লাখ ৫১ হাজার টাকা।
আজ চতুর্থ দিন মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সুকুকটির সর্বোচ্চ দর উঠে ৯৩ টাকায় এবং সর্বনিম্ন ৯১ টাকায়। দিনশেষে ক্লোজিং দর হয় আগের দিনের মতো ৯১ টাকা ৫০ পয়সায়। আজ ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৮টি বন্ড লেনদেন হয়। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্ডটির দর আর নিচে নামার জায়গা নেই। এমনিতেই অনেক নেমে গেছে। তারা বলছেন, আমাদের দেশে বিনিয়োগকারীদের বন্ডের প্রতি আগ্রহ কম। যে কারণে বন্ডটির দর এভাবে নেমে গেছে।
তাদের মতে, বন্ডে লাভবান হতে হলে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু আমাদের শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করতে মোটেও আগ্রহী নয়। তারা স্বল্প মেয়াদের বিনিয়োগেই বেশি আগ্রহী। যে কারণে তারা লাভের চেয়ে ক্ষতির মুখেই পড়েন বেশি।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক গ্রুপ বেক্সিমকো ইসলামি বন্ডটি বাজারে এনেছে। বন্ডটির নাম বেক্সিমকো গ্রিন আল ইস্তিসনা। এর অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। আইপিও এবং প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় মোট তিন হাজার কোটি টাকার অর্থ সংগ্রহ করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ।
পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ডটি শেয়ারে রূপান্তরযোগ্য বন্ডটি প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারে বাজার মূল্যের ২০ শতাংশ ছাড়ে রূপান্তর করা যাবে।
প্রতি বছর এ শরীয়াহ বন্ড থেকে কমপক্ষে ৯ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। এর সঙ্গে বেক্সিমকো লিমিটেড তার সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের যত শতাংশ লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ড) দেবে- তার ১০ শতাংশের সমপরিমাণ হারে এই বন্ড হোল্ডারদের অতিরিক্ত মুনাফা দেওয়া হবে।
এই সুকুকে ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ প্রায় ২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। বেক্সিমকোর শেয়ারহোল্ডাররা প্রায় ২ কোটি টাকা এ বন্ডে বিনিয়োগ করেছিলেন। ব্যক্তির নামে বিনিয়োগ আছে প্রায় ৪২৩ কোটি টাকার। আইপিওর আন্ডাররাইটার (আইপিওতে অবিক্রিত অংশ কিনে নেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদানকারী) প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ১৩৫ কোটি টাকার।