নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জকে অনুমোদন দিতে কিছু শর্ত দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
অন্যদিকে, ডিএসইর সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে লেনদেনের জন্য ম্যাচিং ইঞ্জিনসহ কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল চীনের এই দুই প্রতিষ্ঠান।
আড়াই বছরে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন সংক্রান্ত শর্ত ও চীনা জোটের প্রস্তাব বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে বিএসইসি।
সম্প্রতি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি ডিএসইর চেয়ারম্যানকেও অবহিত করা হয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালের ৬ মে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসবে সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ডিএসইর শেয়ার কেনার চুক্তির সময় কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের শেয়ারবাজার উন্নয়নে কৌশলগত বিনিয়োগকারী প্রস্তাবিত কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চায় কমিশন।
চিঠিতে বলা হয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ৬(৩) অনুয়ায়ী ডিএসইকে এই সংক্রান্ত একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে সাত দিনের মধ্যে বিএসইসিতে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশের শেয়ারবাজার উন্নয়নে কাজ করবে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ডিএসইর মালিকানার ২৫ শতাংশের প্রতিটি শেয়ার ২১ টাকা দামে কিনে নেয় সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ। এজন্য ডিএসইকে শেয়ার বিক্রি বাবদ ৯৪৭ কোটি টাকা দেয় চীনা জোট।
এছাড়া, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসবে চীনা জোটের সঙ্গে ডিএসই’র চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল—লেনদেনের জন্য ম্যাচিং ইঞ্জিন দিতে হবে। উভয় পক্ষের চুক্তি অনুযায়ী আগামী ২০২৪ সালের ডিএসইকে লেনদেনের জন্য ম্যাচিং ইঞ্জিন দেবে চীনের এই দুই প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও, ডিএসইর আধুনিকায়নসহ কারিগরি সহযোগিতায় ভূমিকা রেখেছে চীনা কনসোর্টিয়াম। তবে, করোনা মহামারির কারণে কারিগরি সহযোগিতার কাজে কিছুটা ধীর গতি আছে।
২০১৮ সালের ৩ মে বিএসইসি কিছু শর্তসাপেক্ষে চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন দেয়। পরে ১৪ মে ডিএসইর মালিকানার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয় সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়াম।
বিএসইসির ওই শর্তগুলোর মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সকল কার্যক্রম সিকিউরিটিজ আইন ও দেশের প্রযোজ্য অন্যান্য আইনসহ এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ এবং ডিএসইর ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম অনুযায়ী পরিপালন করতে হবে। চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চুক্তি সইয়ের পরবর্তী এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কমিশনের পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত চুক্তির শর্তাবলী ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় পরিবর্তন করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়।
কৌশলগত বিনিয়োগকারী অনুমোদনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে ডিএসইর কাছ থেকে কোনো অগ্রগতির তথ্য চায়নি বিএসইসি। এবারই প্রথমবারের মতো ডিএসইর কাছে কৌশলগত বিনিয়োগকারী সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছে কমিশন।
প্রসঙ্গত, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক করা সংক্রান্ত এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ অনুযায়ী চীনের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের জোটকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বেছে নেয় ডিএসই।