নিজস্ব প্রতিবেদক: আগের দিন সোমবার ভয়াবহ পতনে শেয়ারবাজারের সূচক কমেছিল ১৩৪ পয়েন্ট। আজ মঙ্গলবারও দিনের মধ্যভাগে সূচক উধাও হয়ে যায় ১১২ পয়েন্টের বেশি। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৩৫০ কোম্পানির শেয়ারে বড় পতন হয়। এই সময়ে পতনের সর্বোচ্চ সীমা পাঁচ শতাংশ ছুঁয়ে আটকে যায় ১২০টির বেশি কোম্পানির শেয়ার।
তবে দিনের শেষভাগে বাই প্রেসারে বাজারে সেই ভয়াবহ চিত্র একদম পাল্টে যায়। আগের দিন যেখানে সর্বোচ্চ সীমা পাঁচ শতাংশ ছুঁয়ে শতাধিক কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। আজ সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ১১টিতে। আগের দিন শেয়ারদর বেড়েছিল ২৬টি কোম্পানির। বিপরীতে আজ শেয়ারদর বেড়েছে ৯৭টি কোম্পানির। আগের দিন সূচক পড়েছিল ১৩৪ পয়েন্ট। বিপরীতে আজ সূচক পড়েছে ২৭ পয়েন্ট। আগের দিন শেষ বেলার সিংহভাগ কোম্পানির লেনদেন ছিল আতঙ্কের দাবানলের মধ্যে। আজ শেষ বেলায় বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ছিল আলোতে ফেরার দুর্দান্ত প্রচেষ্টায়।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গুজব ও আতঙ্কে ভয় পেয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা গতকাল ও আজ হুমড়ি খেয়ে শেয়ার ছেড়েছেন। আর সেসব শেয়ার কম দরে বড় বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা তুলে নিয়েছেন। যে কারণে আজ শেষ বেলায় লেনদেনে ভিন্ন মাত্রা পরিলক্ষিত হয়। তারা বলছেন, কম দরে শেয়ার হাতিয়ে নেয়ার জন্যই বড় বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারে নানা গুজব ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ (মঙ্গলবার) দিনের মধ্যভাগে যেভাবে সেল প্রেসার দেখা গিয়েছিল, তাতে মনে হয়েছিল সূচক পতনে আজ রেকর্ড গড়াবে। কিন্তু শেষ বেলার আধা ঘন্টায় সেই চিত্র বদলে দিয়েছে অনুমান নির্ভর সব চিন্তা-চেতনা। আজ দিনের মধ্যভাগে সূচক যেখানে ১১২ পয়েন্টের বেশি পড়ে গিয়েছিল, সেখানে টানা উত্থান প্রবণতায় সূচকের পতন দাঁড়ায় নামেমাত্র ২৭ পয়েন্টে। প্রকৃতপক্ষে এই সময়ে সিংহভাগ শেয়ার সর্বশেষ বেশি দরে লেনদেন হয়েছে। যদিও ক্লোজিং দর হয়েছে অনেক নিচের দরে। যদি কোম্পানিগুলোর ক্লোজিং দর সর্বশেষ দরে ধরা হয়, তাহলে সূচকরে পতন ২০ পয়েন্টের কাছাকাছি এসে দাঁড়াবে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা বাজারের জন্য শুভ ইংগিত, বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ইংগিত। বিনিয়োগকারীদের বাজারের এই আচরণ বুঝতে হবে। আজ টেকনিক্যাল অ্যালাইসিসেও বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ইংগিত বহন করছে। তাঁরা বলছেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বাজারের আচরণ বুঝেই লেনদেনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অধৈর্য্য হয়ে কম দরে শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যথায়, প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের কাছে তাদের বার বারই পরাজয় বরণ করতে হবে।