নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও তিন মাসে ব্যাংক খাতে কোটিপতি হিসাবধারীদের সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে কোটি টাকার ওপরে আমানতের হিসাব বেড়েছে ১৬০৩টি।
এদিকে, কোটি টাকার উপরে ঋণ হিসাব বেড়েছে ২৪৮২টি। দুই হিসাবেই কোটি টাকার ওপরের গ্রাহকদের জমা টাকাও বেড়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোয় কোটি টাকার ওপরে জমা আছে এমন হিসাব ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টি। গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৭৯টি।
আলোচ্য তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতের হিসাব বেড়েছে ১ হাজার ৬০৩টি। ওইসব হিসাবে জমা টাকাও বেড়েছে। এসব হিসাবের বেশির ভাগই বেসরকারি খাতের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতে যখন আমানতের প্রবৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্য হারে কমছে, তখন কোটিপতি আমানতকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। এর মানে-আমানতের টাকা একটি শ্রেণির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে।
যে কারণে গুটিকয়েক আমানতকারীই ব্যাংকে আমানত রাখছেন। এছাড়া আমানতের বিপরীতে সুদ আরোপ ও নতুন করে টাকা জমার কারণে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আগের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোয় কোটি টাকার ওপরে জমা আছে এমন ঋণ হিসাব ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৬৬টি। ৩১ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৮৪টি। আলোচ্য তিন মাসে কোটিপতির ওপরে ঋণ হিসাব বেড়েছে ২৪৮২টি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে। এছাড়া করোনার কারণে অনেকেই আগের ঋণ শোধ করেননি। ফলে আগের ঋণের সঙ্গে সুদ যোগ করার কারণে কোটিপতি ঋণগ্রহীতা বেড়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১ কোটির বেশি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৮১ হাজার ৩৪৪টি হিসাবে জমা ছিল ১ লাখ ৬৮ কোটি টাকা। ৫ কোটির বেশি থেকে ১০ কোটি পর্যন্ত ১১ হাজার ৪৮৭টি হিসাবে জমা ছিল ৮১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ১০ কোটির বেশি থেকে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৬৫টি হিসাবে জমা ছিল ৪৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ১৫ কোটির বেশি থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৭৭১টি হিসাবে জমা ছিল ৩১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।
২০ কোটির বেশি থেকে ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৫টি হিসাবে জমা ছিল ২৬ হাজার কোটি টাকা। ২৫ কোটির বেশি থেকে ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত ৮৮৬টি হিসাবে জমা ছিল ২৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। ৩০ কোটির বেশি থেকে ৩৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৪৫৮টি হিসাবে জমা ছিল ১৪ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। ৩৫ কোটির বেশি থেকে ৪০ কোটি টাকা পর্যন্ত ২৯০টি হিসাবে জমা ছিল ১০ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।
৪০ কোটির বেশি থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত ৬৪৪টি হিমাবে জমা ছিল ২৯ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। ৫০ কোটি টাকার বেশি ১ হাজার ৬৯৭টি হিসাবে জমা ছিল ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।