নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংক লিমিটেড শেয়ারহোল্ডারদের ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ এবং খেলাপি ঋণের নিয়ম বজায় রাখতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সাম্প্রতিক ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে একটি চিঠির মাধ্যমে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএসইসি।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নথি এবং ব্যাখ্যা জমা দিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, ব্যাংকটি ২০২১ এর জন্য তার শেয়ারহোল্ডারদের ২ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এরই মাধ্যমে ব্যাংকটি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিনিয়োগকারীধের শুধুমাত্র স্টক ডিভিডেন্ড প্রদান করে আসছে।
আর স্টক ডিভিডেন্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন বেড়েছে ১৪০ শতাংশ। কিন্তু আইন অনুযায়ী টানা দুই বছর ক্যাশ ডিভিডেন্ড না দিলে কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে 'জেড' ক্যাটাগরিতে পাঠানো হয়। ব্যাংকটির শেয়ার বর্তমানে 'এ' ক্যাটাগরিতে লেনদেন হচ্ছে, তবে এখন 'জেড'-এ যাবে।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ব্যাংকের শ্রেণিবদ্ধ ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় বিধান রয়েছে ৫,১৩৫ কোটি টাকা। কিন্তু এর বিধান রয়েছে মাত্র ২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৮ কোটি টাকা।
এই ঘাটতির কারণে, ২০২১ সালে ব্যাংকের নিট সম্পদ মূল্য এবং শেয়ার প্রতি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে যা বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করছে বিএসইসি।
নিরীক্ষিত বিবৃতি অনুসারে, ২০২১ সালের শেষে ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬,৬৬৬ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১৮.৮৪ শতাংশ। ২০২১ সালে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আগের বছরের তুলনায় ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। রূপালী ব্যাংক ১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে ৯.৮১ শতাংশ শেয়ার ইস্যু করে।
এদিকে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকটির মূল ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। উচ্চ সুদে আমানত নিয়ে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করায় এর নিট সুদের আয় নেতিবাচক হয়ে উঠেছে। এরপরও ব্যাংকটি নিয়মিত মুনাফা দেখাচ্ছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে সরকারি সিকিউরিটিজ এবং শেয়ারবাজারে বড় বিনিয়োগের কারণে। এছাড়া কম প্রভিশনিংও এটিকে লাভ দেখাতে সাহায্য করেছে।
এইভাবে, ব্যাংকটি ২০২১ সালে মুনাফা ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি দেখাতে সক্ষম হয়েছে। এই বছরের প্রথম প্রান্তিকের মুনাফাও ২৯ শতাংশ বেড়েছে।