নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। অন্যদিকে মহামারি-পরবর্তী সময়ে বিশ্বজুড়ে বেড়েছে জ্বালানির চাহিদা। এই অবস্থায় অন্যতম জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে।
বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে ভারতেও জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা হতে যাচ্ছে অনেকটা চীনের মতো। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে বেইজিং জ্বালানি রপ্তানিতে কড়াকড়ি আগেভাগেই আরোপ করেছে।
অন্যদিকে বিশ্বের ৩ নম্বর তেল আমদানিকারক দেশ ভারত কম টাকায় রাশিয়ান তেল আমদানি করে তেলপণ্যের রপ্তানি বাড়িয়েছে।
আসলে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রাজস্ব বাড়াতে চাইছে দিল্লি। পাশাপাশি স্থানীয় সরবরাহও বাড়াতে চাইছে দিল্লি।
কনসালটেন্সি এনার্জি অ্যাসপেক্টস বলছে, ‘রপ্তানি কর বাড়ানো হলে ত্রৈমাসিক ডিজেল রপ্তানি দিনে এক লাখ ব্যারেল থেকে গড়ে ৬ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল হতে পারে।
প্রতিষ্ঠান বলছে, ‘ভারতীয় রপ্তানি শূন্যের কোঠায় নামবে না। কারণ নতুন নিয়মগুলো কেবল রপ্তানির পরিমাণ কমাবে। পাশাপাশি বেসরকারি শোধকদের রপ্তানির পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমাবদ্ধতায় রাখবে।’
তবে ভারতের ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে রপ্তানি স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসবে।
ভারত সরকারের হিসাবে, বছরের প্রথম পাঁচ মাসে পেট্রল ও ডিজেল রপ্তানি ১৬ শতাংশের বেশি বেড়ে ১৫০ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ব্যারেলে পৌঁছায়। এ সময়ে কমোডিটি ডেটা এবং অ্যানালিটিকস সলিউশন কোম্পানি কেপলারের কার্গোগুলো এশিয়া প্যাসিফিক, আফ্রিকা এবং ইউরোপের দিকে পরিচালিত হয়েছিল।
নতুন নিয়মে ভারতীয় শোধনাগারগুলোকে ডিজেল রপ্তানি পরিমাণের কমপক্ষে ৩০ শতাংশের সমতুল্য দেশীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হবে। পেট্রলের ক্ষেত্রে এটি ৫০ শতাংশ।
রিলায়েন্সের ৭ লাখ ৪ হাজার বিপিডি রপ্তানি শোধনাগারে উইন্ডফল ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে। যদিও শোধনাগারটি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত। রিলায়েন্স ও নায়ারা এনার্জির সম্মিলিত ক্ষমতা প্রায় ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন বিপিডি।
এনার্জি অ্যাসপেক্টস বলছে, ভারত এমন সময়ে রপ্তানি কমাচ্ছে, যখন বিশ্বজুড়ে জ্বালানির চাহিদা তীব্র। অন্যদিকে চীনের রপ্তানি কমে আসার আশঙ্কাও রয়েছে। যার প্রভাব পড়তে যাচ্ছে সিঙ্গাপুরে। বাদ যাবে না পুঁজিবাজারও।
রিফিনিটিভ ইকনের তথ্য বলছে, বিশ্বব্যাপী ঘাটতি এবং বাণিজ্যপ্রবাহের পরিবর্তনের মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের শুরু ফেব্রুয়ারিতে। এরপর থেকে ডিজেলের এশিয়ান পরিশোধন ১৯২ শতাংশের বেশি বেড়েছে।