নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলার বাজার সিন্ডিকেট মুক্ত করার লক্ষ্যে মানিচেঞ্জারের ওপর নির্ভরতা হ্রাস ও হুন্ডি প্রতিরোধে এবার সারাদেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় নগদ বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বর্তমানে বৈদেশিক লেনদেনে নিয়োজিত অথরাইজড ডিলার ব্যাংকগুলোর (এডি) শাখা থেকেই নগদ ডলার কেনাবেচনার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, মানিচেঞ্জার ও খোলা বাজারে ডলারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। চলতি সপ্তাহেই ব্যাংকগুলোতে এই ধরনের সেবা চালুর অনুমোদন দেয়া শুরু হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সারাদেশে বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার শাখার সংখ্যা খুব কম। যেগুলো আছে সেগুলোর বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকা ও কয়েকটি বিভাগীয় শহরে অবস্থিত। ফলে নগদ ডলার কেনাবেচার জন্য মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হয়।
আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি জানিয়েছে, এই ধরনের সেবা কোন এলাকার কোন শাখায় চালু করা হবে সেই সম্ভাব্য তালিকা চেয়ে আগামী রোববার দেশের সব ব্যাংকের কাছে চিঠি দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রাথমিকভাবে শাখাগুলোতে একটি ডেস্কের মাধ্যমেই এই সেবা চালুর অনুমোদন দেয়া হবে।
ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা জানান, খোলাবাজার থেকে যে কেউ ডলার কিনতে পারেন। ব্যাংক থেকে কিনতে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট করতে হয়। যে কারণে অনেকে এখন খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে শেয়ারবাজারের মতো বিনিয়োগ করছেন, যা অবৈধ। এতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
গত বুধবার কার্ব মার্কেটে এক ডলার কিনতে ১২০ টাকা গুনতে হয়েছে৷ অথচ আন্তব্যাংকে ডলার রেট ছিল ৯৫ টাকা। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেটের কারণেই ডলার রেকর্ড দাম উঠেছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তঃব্যাংকের সঙ্গে খোলাবাজারে ডলারের দামের পার্থক্য প্রায় ২৫ টাকা। আর ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজার রেট অনেক বেশি হওয়ায় হুন্ডিতে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এই কারণে ডলার বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল একশ’র বেশি মানি চেঞ্জার পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে ৪২ টি প্রতিষ্ঠানকে ডলার কেনাবেচায় বিভিন্ন অনিয়মের কারণে শোকজ করা হয়। আর ৫টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করেছে।
লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজির প্রমাণ পাওয়ায় ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।