নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত তারকা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। গান গাওয়ার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন-বিবিসি, এজেন্সি ফ্রান্স প্রেস-এএফপি হিরো আলমকে পুলিশের তুলে নেওয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে।
ঠিক এই সময়ই তাকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন সাবেক স্ত্রী নুসরাত জাহান জিমু। হিরো আলমের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন জিমু। তিনি হিরো আলমের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ তুলেছেন।
মডেল-অভিনেত্রী জিমু বলেন, হিরো আলমের সঙ্গে সংসার থাকা অবস্থায় স্ত্রীর গোপন ছবি তুলে রেখেছিলেন হিরো আলম। আর সে ছবি দিয়ে বিভিন্ন ভাবে ব্ল্যাকমেইল করছেন তিনি। আর এই কারণে বাধ্য হয়েই আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন নুসরাত।
জিমুর ভাষ্য, ‘নিজের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মিডিয়ায় কথা বলতেও খুব লজ্জা লাগে। কিন্তু নিরূপায় হয়ে কথাগুলো বলতে হচ্ছে। হিরো আলম এখনও দাবি করেন, আমি তার স্ত্রী। কিন্তু আমার সঙ্গে ওর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে গত রমজান মাসে। আমি আইনজীবীর মাধ্যমে ওকে বিবাহ-বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছি, যা সে গ্রহণও করেছে।’
হিরো আলমের সাবেক এই স্ত্রী বলেন, ‘মানুষের জীবনে ভাল-মন্দ সময় আসে। হিরো আলমের সঙ্গে সংসার করার সময়টা আমার জীবনের মন্দ সময়ই বলা যায়। আমি বাধ্য হয়েই ওকে তালাক দিয়েছি। আর এক কাপড়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে এসেছি।’
মডেল জিমু বলেন, ‘কিন্তু হিরো আলম এখনও মানতে নারাজ আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। আমি চাই ও সুখে থাকুক, নিজের মতো করে চলুক। কিন্তু ও আমাকে নানা ভাবে ব্ল্যাকমেইল করছে। আমার কাজে বাঁধা দিচ্ছে। ওর জন্য আমি কোনো স্টেজ শো ও নতুন কাজ করতে পারছি না। আমার সঙ্গে যারা কাজ করছে তাদের সবাইকে ও এবং ওর লোকজনরা হুমকি দিচ্ছে। আমার এক বন্ধুও বাধ্য হয়ে ওর নামে থানায় অভিযোগ করেছে। আর আমিও কিছুদিন আগে ভাটারা থানায় ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক থাকা প্রতিটি মানুষেরই অন্তরঙ্গ কিছু বিষয় থাকে। হিরো আলম সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে। ওই সময় ও আমার কিছু অন্তরঙ্গ ছবি তুলে রেখেছিল। আমার ইচ্ছের বিপরীতেই সে এই কাজগুলো করেছিল। বুঝিনি সেটা আজ কাল হয়ে দাঁড়াবে। এখন সেসব ছবি দিয়েই সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে।’
জিমু বলেন, ‘যারা আমার সঙ্গে কাজ করতে চায়, তাদেরকে সে হুমকি দিচ্ছে। আবার কাছের মানুষদের মেসেঞ্জারে সেসব গোপন ছবি পাঠিয়ে আমাকে বলছে, তার কথা মতো না চললে সে এসব ছবি ভাইরাল করে দেবে। মান-সম্মানের ভয়ের আমি এখন ঘর থেকেও বের হতে পারছি না। আমাকে দেখলে ওর লোকেরা নানা ভাবে হাস্য-রসিকতা ও হুমকি দিয়ে যায়। আমি কোনো উপায় না পেয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’
নুসরাত জাহান জিমুর এসব অভিযোগের সত্যতা জানতে হিরো আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যে কথা। ও যে অভিযোগ দিয়েছে আমি সেই কথার রেকর্ড শুনতে চাই। এরপর আমি ওর অভিযোগের উত্তর দেবো।’
এদিকে গান বিকৃতি, অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ইতোমধ্যেই আইনের মুখোমুখি হয়েছেন হিরো আলম। কিছুদিন আগে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে অপহরণের। চলতি মাসে ৫ তারিখ গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে এনে হিরো আলমের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রুবেল মুন্সী নামের এক যুবক।
দীর্ঘ আট বছরের সম্পর্কের ২০১৯ সালে হিরো আলমকে বিয়ে করেন নুসরাত জাহান। কিন্তু বছর দুই যাওয়ার পরই তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। অবশেষে চলতি বছর বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন নুসরাত জাহান।