নিজস্ব প্রতিবেদক: সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলার মেয়েরা। ঐতিহাসিক এ জয়ে খুশি দেশবাসী। এই অর্জনের অন্যতম দাবিদার হলেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পারকোলা গ্রামের আখতার হোসেনের ছেলে আঁখি খাতুন ও নাছিমা বেগম।
জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের প্রতিরক্ষা খেলোয়াড় আঁখি খাতুনের বাবা আখতার হুসেন মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জানান, অনেক কষ্ট ও কড়া কথা সহ্য করে তিনি আঁখিকে ফুটবল খেলার অনুমতি দিয়েছেন। আমার স্বপ্ন ছিল আঁখি শুধু আমার মুখে নয়, সারা দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু না করলে এ স্বপ্ন পূরণ হতো না। একমাত্র বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলেই আমার মেয়ে এতদূর যেতে পেরেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, তিনি আমার পরিবারকে একবার ১০ লাখ, দ্বিতীয়বার তিন লাখ এবং দ্বিতীয়বার দুই লাখ টাকা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পাঁচ একর জমিও উপস্থাপন করেন।
আঁখির বড় ভাই নাজমুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের সংসার এখন সুখের। আমাদের আর কোনো সমস্যা নেই। আগে আমাদের অভাব ছিল। মা মাঝে মাঝে বিভিন্ন বাড়ি থেকে চাল-ডাল নিয়ে আসতেন। তোমাকে এখন আনতে হবে না।'
আঁখির বান্ধবী মনোয়ারা, তিশা ও ঊর্মি বলেন, 'আমরা আঁখির সঙ্গে বাইরে পড়েছিলাম। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলে দৌড়ে ও লাফ দেওয়া প্রথম খেলোয়াড় তিনি। এতে আমরা গর্বিত।
"সেই ছোট্ট আঁখি আর সিরাজগঞ্জ বা শাহজাদপুরের গর্ব নয়, পুরো দেশের গর্ব," বলছিলেন পেড়কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলা উদ্দিন, ফুটবল খেলে আঁখি পরিবারের দিন বদলে দিয়েছে।
২০১৪ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবলে শাহজাদপুর ইব্রাহিম বালিকা বিদ্যালয়ের হয়ে খেলে প্রথম নজরে আসেন আঁখি। এরপর ২০১৫ সালে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক আসে তার। ২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এ টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে আঁখি খাতুন গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন।