নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে ২০১২ সালে মিয়ানমার এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় বাংলাদেশের এখন ৩৪৫ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল।
বঙ্গোপসাগরে ইলমেনাইট, টাইটেনিয়াম অক্সাইড, ম্যাগনেটাইট, মোনাজাইট, কোবাল্টসহ ১৭ ধরনের মূল্যবান খনিজের সন্ধান মিলেছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরের ২২টি ব্লকে প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা। ইলমেনাইট, টাইটেনিয়াম অক্সাইড, ম্যাগনেটাইট, মোনাজাইট, কোবাল্টসহ ১৭ ধরনের মূল্যবান খনিজের সন্ধানও মিলেছে বঙ্গোপসাগরে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মৎস্য গবেষণা ও জরিপ জাহাজ ‘আর ভি মিন সন্ধানী’ ৩৫টি সার্ভে ক্রুজ পরিচালিত হয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগর থেকে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ আহরণ হচ্ছে। নতুন করে চিহ্নিত ২২০ প্রজাতির সি- উইড, ৩৪৭ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪৯৮ প্রজাতির ঝিনুক, ৫২ প্রজাতির চিংড়ি, ৫ প্রজাতির লবস্টার, ৬ প্রজাতির কাঁকড়া এবং ৬১ প্রজাতির সি- গ্রাস।
বঙ্গোপসাগরে বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় উইন্ড মিল স্থাপন করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। সামুদ্রিক শৈবাল থেকে তৈরি হচ্ছে ওমেগা-থ্রি এবং ওমেগা সিক্স অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে জিডিপি বাড়বে ৩ শতাংশ। পর্যাপ্ত জাহাজ, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও তথ্যের অভাবে মাত্র ৬০ কিলোমিটারে মাছ আহরণ করা যাচ্ছে। এতে করে বিশাল সম্পদ ভাণ্ডারের ৯০ ভাগেরও বেশি অজানাই থাকছে।
অস্ট্রেলিয়ার জিডিপিতে ৪৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখছে ব্লু ইকোনোমি। এ ছাড়া চীনে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৫০০ বিলিয়ন ইউরো, আয়ারল্যান্ডে ৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ইউরো, মরিশাসে ১০ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫৯ বিলিয়ন ডলার এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১১৪ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন ডলার অবদান রাখছে এই ব্লু ইকোনমি। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় যে হাইড্রোকার্বন আছে, সেগুলো আহরণের জন্য পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগ দরকার। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় রকমের লাভ নিয়ে আসছে পারে। এতে জিডিপির সঙ্গে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ বাড়তে পারে।