নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নতুন করে ৫৮টি ট্রেক অনুমোদন দিয়েছে। নতুন করে অনুমোদন পাওয়া ট্রেকগুলোর মধ্যে অন্যতম আমায়া সিকিউরিটিজ। প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদনের পর যাত্রা শুরু করে গত আগস্ট মাসে। যাত্রা শুরুর দুই মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। শেয়ারনিউজ২৪.কম এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী পরিচালক আসলাম সেরনিয়াবাত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শেয়ারনিউজের স্টাফ রিপোর্টার শাহ মো. সাইফুল ইসলাম।
আসলাম সেরনিয়াবাত শেয়ারনিউজকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জন করে আমায়া সিকিউরিটিজ এগিয়ে যেতে চায়। বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করে সিকিউরিটিজ হাউজের শীর্ষ তালিকায় নিজেদের স্থান করে নেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। এরই প্রেক্ষিতে আমায়া সিকিউরিটিজ শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত যে খরচ তাই নিচ্ছে। এর বেশি কোন কমিশন নেওয়া হয় না। যা আগামী এক বছর চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কর্ণধার।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসলাম সেরনিয়াবাত এফবিসিসিআই’র অন্যতম পরিচালক। তার বাড়ী পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ধুলিয়ারী গ্রামে। আসলাম সেরনিয়াবাত জাতীয় কর কার্ড পুরস্কার প্রাপ্ত সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী ব্যবসায়ী। বিগত আট বছর যাবত তিনি ঢাকা জেলার সর্বোচ্চ করদাতা হিসাবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
এছাড়া তিনি একজন সিআইপি। আসলাম সেরনিয়াবাত ঢাকার গাড়ী আমদানী ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘কার সিলেকশনের’ স্বত্ত্বাধিকারী। তিনি বারভিডা, লায়নস ক্লাব অব ঢাকা গ্রান্ড, বারিধারা সোসাইটির নির্বাহী সদস্য এবং ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র গুলশানে নির্মাণাধীন একটি ফাইভ স্টার হোটেল ও গাজীপুরে নির্মাণাধীন একটি রিসোর্টের উদ্যোক্তা।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসলাম সেরনিয়াবাত ২৫ বছর ধরে শেয়ারবাজারে সাথে সম্পৃক্ত। তিনি ১৯৯৬ সাল এবং ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধ্বসে হারিয়েছেন নিজের পুঁজির বেশিরভাই। এরপরেও তিনি শেয়ারবাজার ছেড়ে যাননি। তিনি বলেন, আমার ছোট বেলা থেকেই একটা নীতি ছিলো, যে কাজে আমি ব্যর্থ হবো, সে কাজ আমি পরিপূর্ণ করবোই। আর আমার সফলতার পেছনে এই নীতিটাই বেশি কাজ করেছে।
তিনি বলেন, আমি শেয়ারবাজারে ১৯৯৬ সালে এক বড় ভাইয়ের হাত ধরে বিনিয়োগ করি। এরপর বড় ধ্বসে অনেক বেশি লোকসানে পড়ি। এরপর থেকে এই বাজারে লেগে থাকি। ক্রমাগত লেগে থাকাই আমাকে এতদুর এগিয়ে আসতে সহায়তা করেছে।
এরই প্রেক্ষিতে, ২০১৯ সালে আমি একটি ব্রোকারেজ হাউজও কিনতে চেয়েছি। পরবর্তীতে তা কিনতে না পারলেও ২০২০ সালে ডিএসইর বিজ্ঞপ্তি দেখে ট্রেকের আবেদন করি। আল্লাহর রহমতে আমরা ট্রেকের আনুমোদনও পাই।
শেয়ারবাজারে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শুধু ব্রোকারেজ হাউজ নিয়েই বসে থাকতে চান না বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসলাম সেরনিয়াবাত। তিনি গুলশানের নির্মানাধীণ ফাইভ স্টার হোটেল এবং গাজীপুরে অবস্থিত একটি এগ্রো ফার্মকে বাজারে নিয়ে আসতে চান।
তিনি বলেন, কোন ব্যবসায় লোকসান হলেই সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে চলবে না। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে দেশের অন্যতম বিশিষ্ট গাড়ী ব্যবসায়ী বলেন, আমি প্রথম যে গাড়ি দিয়ে ব্যবসা শুরু করি, তাতেও আমার বড় লোকসান হয়েছে। তবুও আমি গাড়ী ব্যবসা ছেড়ে দেইনি, ধরে রেখেছি। যার কারণে পরবর্তীতে মহান আল্লাহ আমাকে অনেক বেশি মুনাফা করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
শেয়ারবাজারেও আমার একই অবস্থা হয়েছে। প্রথমে অনেক বেশি লোকসানে পড়েছি। কিন্তু হতাশ না হয়ে ধৈয়্য ধরে শেয়ারবাজারেও লেগে ছিলোম। যার কারণে এখান থেকেও ভালো মুনাফা করতে পেরেছি।
বর্তমান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, এই কমিশন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো কমিশন। এর আগে এমন ডা্য়নামিক কমিশন আর এসেছে বলে আমার মনে হয়না। শিবলী স্যারের প্রতিটি পদক্ষেপই বিনিয়োগকারীদের সার্থসংশ্লিষ্ট। যার ফলে বিনিয়োগকারীরা অনেক বেশি উপকৃত হয়েছে বলেও আমি মনে করি।