নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ার কারসাজি এবং অবৈধ প্লেসমেন্ট বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হামদুল ইসলামকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একইসঙ্গে তাকে শেয়ারবাজারের সব কর্মকাণ্ড থেকে আগামী ৫ বছর নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এছাড়া, হামদুল ইসলামের সঙ্গে জড়িত থেকে কারসাজিতে সহায়সতা করার অভিযোগে তার ৫ স্বজনকে ১৬ কোটি টাকা জারিমানা করা হয়েছে।
শেয়ার কারসাজি এবং অবৈধ প্লেসমেন্ট বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে হামদুল ইসলামসহ তার সহযোগীদের মোট ২৬ কোটি টাকা জরিমানা করেছে কমিশন।
তদন্ত সাপেক্ষে শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় এনেছে বিএসইসি। সম্প্রতি বিএসইসির কমিশন সভায় তাদের শাস্তির এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, হামদুল ইসলামকে শেয়ার কারসাজিতে সহায়তাকারী স্বজনদের মধ্যে রয়েছেন- স্ত্রী শাহিদা আরাবি, ভাই সাইফুল ইসলাম, বোন হোসনে আরা বেগম, শ্বশুর মো. আব্দুস সুলতান ও বোন জামাই কাজী এমদাদুল হক।
এর মধ্যে হামদুল ইসলামকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস, ২০১৫ এর রুল ৩(২) (ডি) ভঙ্গের দায়ে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
হামদুল ইসলামকে শেয়ারবাজারের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে আগামী ৫ বছর নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, হামদুল ইসলামের স্ত্রী শাহিদা আরাবিকে ২ কোটি টাকা, ভাই মো. সাইফুল ইসলামকে ৪ কোটি টাকা, বোন হোসনে আরা বেগমকে ৩ কোটি টাকা, শ্বশুর আব্দুস সুলতানকে ৩ কোটি টাকা, বোন জামাই কাজী এমদাদুল হককে ৪ কোটি টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই পাঁচ জনের জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তাদের নামে পরিচালিত সব বিও হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন ও লিংক হিসাবে মাধ্যমে শেয়ার স্থানান্তর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে, হামাদুল ইসলাম শেয়ারবাজারে ইস্যু ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অবৈধভাবে প্লেসমেন্ট ব্যবসা করতেন। এই প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়ে তিনি কারসাজি করতেন। শুধু ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা কোম্পানিগুলোতে নয়, বরং যেসব কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করেছে সেগুলোতেও তার আধিপত্য ছিল। কোনো কোম্পানির জন্য তিনি ইস্যু ম্যানেজার, আবার কোনো কোম্পানির জন্য তিনি আন্ডাররাইটার হিসেবে কাজ করেছেন।
এছাড়া, হামদুল ইসলাম তার স্বজনদের সঙ্গে যোগসাজস করে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করতেন। তার ইস্যু ব্যবস্থাপনার আওতায় থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সি পার্ল, বিবিএস ক্যাবলস, নাহি অ্যালুমুনিয়াম ও লাভেলো আইসক্রীম।
উল্লেখ্য, বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে লেনদেন বন্ধ থাকা ব্রোকার হাউজ বানকো সিকিউরিটিজ ও বানকো ফাইন্যান্স একই মালিকানাধিন প্রতিষ্ঠান। এছাড়া, হামদুল ইসলাম বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) নির্বাহী কমিটির সদস্য।