নিজস্ব প্রতিবেদন: দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সাহসী কাজ করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চাকরিচ্যুত উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে ৩৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
গত দুই দিনে তিনি নামিদামি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অনেক ছোটখাটো প্রতিষ্ঠান থেকেও চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন।
এর মধ্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও শরীফকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চাকরি হারানো দুদকের পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চাকরি ফেরত চেয়ে তিনি দুদকের দ্বারে দ্বারে মাসের পর মাস ধরে ঘুরছেন। চাকরিচ্যুতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন। কিন্তু তার আবেদনে সাড়া দেওয়া হয়নি।
এমনকি তিনি চাকরি ফেরত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলেও দুদক থেকে তার বিরুদ্ধে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
এমন বাস্তবতায় দিশেহারা হয়ে পড়েন শরীফ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকাই তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে তিনি চট্টগ্রামে তার ভাইয়ের এক মুদির দোকানে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
বিষয়টি গণমাধ্যমের নজরে আসলে সবাই ইতিবাচকভাবে শরীফের এই দুর্বিসহ জীবনের কথা তুলে ধরে। গণমাধ্যমের এসব প্রতিবেদন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নজরে গেলে তারা শরীফকে চাকরির জন্য প্রস্তাব দেন। তবে শরীফ এই বিষয়ে এখনই কোনো কথা বলতে চান না।
তবে তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই আমার পাশে থাকার জন্য। তাদের কারণেই আমি অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফকে দুদক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৫৪(২)তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দিন, উপ-সহকারী পরিচালক, দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।’
তবে সেই নোটিশে চাকরিচ্যুত করার নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টি খোলাসা করাও হয়নি। তাকে চাকরি ফেরত দিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। জাতীয় সংসদেও তার বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। এমনকি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদক কর্মকর্তারা তার জন্য মাঠে নেমেছিলেন। এতকিছুর পরও চাকরি ফেরত পাননি শরীফ।