নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের কারণে ইউরোপের জ্বালানি সমস্যা কয়েক বছর ধরে চলবে। আর এ সংকট মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জ্বালানি চাহিদা ব্যাপকভাবে হ্রাস করতে হবে। সেই সঙ্গে তাদের গ্যাসের অতিরিক্ত সরবরাহ খুঁজে বের করতে হবে। এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। জ্বালানিখাত সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সম্পূর্ণরূপে ভরা গ্যাসক্ষেত্রগুলো পরের গ্রীষ্ম ও পরবর্তী শীতকাল পর্যন্ত পর্যাপ্ত সরবরাহ দিতে পারবে এমন নিশ্চয়তা দেয়া যাচ্ছে না।
সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো তাদের গ্যাস ধারণক্ষমতার ৯০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিল। যদিও তখন গ্যাসের চাহিদা সর্বাধিক ছিল। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা সরবরাহ কমিয়ে দেয়। তারপরও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর গ্যাস মজুতে সমস্যা হয়নি।
সিঙ্গাপুরে একটি সম্মেলনে এশিয়া অঞ্চলের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি ভিটোলের প্রধান সিড বাম্বাওয়ালে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ‘আমরা একটি গ্যাস সংকটে রয়েছি এবং আগামী দু-তিন বছর এ সংকট থাকবে। সুতরাং আমাদের মিথ্যা আশ্বাস দেয়া ঠিক হবে না।’
জ্বালানি বিশ্লেষকরা পরামর্শ দিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে শক্তির চাহিদা ব্যাপকভাবে হ্রাস করতে হবে এবং এ অঞ্চলের জন্য গ্যাসের অতিরিক্ত সরবরাহ খুঁজে বের করতে হবে। ভিটোলের প্রধান নির্বাহী রাসেল হার্ডির মতে, গ্যাসের মজুত পুনরায় পূরণ করতে এবং গ্রীষ্মকালে শিল্পখাতের চাহিদা দূর করতে গ্যাসের দাম যথেষ্ট বেশি থাকা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ইউরোপে সর্বাধিক গ্যাস সরবরাহ করত রাশিয়া। কিন্তু দেশটির ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা সরবরাহ কমিয়ে দেয়। এ কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে গ্যাসের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তারা পর্যাপ্ত সরবরাহ পায়নি। ফলে এসব অঞ্চলে গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। জুলাইয়ের শুরুতে রাশিয়ার সরবরাহ বাধার মুখে পড়লে এ অঞ্চলে জ্বালানির সংকট নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়।
গ্যাস সরবরাহ হ্রাসের জন্য রাশিয়া নর্ডস্ট্রিম পাইপলাইনের রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যাগুলো সবার সামনে এনেছিল। পরে সেপ্টেম্বরে পাইপলাইনগুলোতে নাশকতা হয়। ফলে নর্ডস্ট্রিম পাইপলাইন দিয়ে সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।