নিজস্ব প্রতিবেদক: জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলো রাশিয়া থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার বেঁধে দেয়ার প্রেক্ষাপটে নতুন আরেক সঙ্কট তৈরি হতে চলেছে। পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া তেলের দাম না মানার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। কীভাবে এর জবাব দেয়া যায় সেই উপায় খোঁজা হচ্ছে বলে হুংকার দিয়েছে পুতিন। এর আগে ।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে দেশটির বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব। রাশিয়াকে বিশ্ব অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য, দেশটির প্রধান রপ্তানি পণ্য তেল ক্রয়ের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। পুতিন যাতে ইউক্রেনের যুদ্ধের খরচ দিতে না পারে সেজন্য পশ্চিমা দেশগুলো তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিশ্ববাজারে টিকে আছে রাশিয়া। তেলের দাম কমিয়ে চীন ও ভারতসহ অনেক দেশে তেল বিক্রি করে দেশটি। অন্যান্য দেশও রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার এবং তেলের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছে।
দীর্ঘ তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে ফোন তোলা হলো। সমুদ্রপথে রাশিয়ায় রপ্তানি করা তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। কম দামে রাশিয়ান তেল কেনার প্রধান প্রস্তাব হল শীর্ষ সাত অর্থনীতির জোট জি-৭। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়াও এই সিদ্ধান্তে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এখন থেকে পশ্চিমাদের বেঁধে দেওয়া দামের সঙ্গে একমত দেশগুলোকে সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল কেনার ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার বা এর কম দাম পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে যেসব দেশ এই প্রস্তাব মানবে না, সেসব দেশে রুশ তেল সরবরাহকারী জাহাজগুলোকে বিমা সুবিধা দেবে না ইউক্রেনের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এ পদক্ষেপের ফলে রাশিয়ার আয় কমে যাবে। ফলে অচিরেই বড় ধাক্কা খাবে পুতিন প্রশাসন।
গত সেপ্টেম্বরে এই প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান নিয়ে গঠিত জোট জি-৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আর জি-৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়ার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেল বিক্রির আয় দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন পুতিন। সেই পথ এবার অনেকটা বন্ধ হবে। তবে পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া তেলের দাম রাশিয়া 'মানবে না' বলে জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, পশ্চিমাদের কীভাবে এর জবাব দেয়া যায় সেই উপায় খোঁজা হচ্ছে।
ইউক্রেনের দখলকৃত দনবাস অঞ্চলে সফরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে কখন দনবাসে সফরে যাবেন বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় সম্মত হলে, রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগ কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা বিবেচনা করা উচিত পশ্চিমাদের।