নিজস্ব প্রতিবেদক: মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের পাশাপাশি পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এবং প্রস্তাবিত বে-টার্মিনাল পরিচালনায় বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে বিশ্বখ্যাত কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই চলছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের কাজ শেষে এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজও ভেড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে এগিয়ে চলছে প্রস্তাবিত বে-টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। এদিকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজও শেষ পর্যায়ে। বন্দরের এসব জেটি এবং টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে বিদেশি প্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘আরব আমিরাতের কিন্তু দুটি অংশ: একটি দুবাই, আরেকটি আবুধাবি। দুটি অংশই কিন্তু আমাদের এখানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় দেশগুলোও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ডেনমার্কও রয়েছে।’
এছাড়া, বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে। প্রতিষ্ঠানটি পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তেমনি বে-টার্মিনালে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্লড। পাশাপাশি চীনের চায়না মার্চেন্টস স্পোর্ট হোল্ডিং, ভারতের আদানি গ্রুপ, সিঙ্গাপুরের পিএসএ, দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই এবং ডেনমার্কের এপিএমওর চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। বন্দরের পাশাপাশি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগও শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘টেকনোলজি ট্রান্সফার এবং টার্মিনাল অপারেশনের কাজ করতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এটি বিল অন ট্রান্সফার (বিওটি) ভিত্তিতে হবে, নাকি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) ভিত্তিতে হবে, সেগুলো আমাদের পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঠিক করা হবে।’
তবে বিদেশি বিনিয়োগ আসার আগে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বন্দরটিকে আরও বেশি ব্যবসাবান্ধব করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক এ এম ডি মহিউদ্দিন।
উল্লেখ্য, সাগর থেকে মাটি এনে প্রায় ৯০০ একর নতুন ভূমির ওপর বে-টার্মিনাল গড়ে উঠবে। এখানে যেকোনো গভীরতার ৩৫টি জাহাজ একসঙ্গে অবস্থান করতে পারবে। তাই এই বে-টার্মিনাল নিয়েই বিদেশিদের আগ্রহ বেশি। সাইফ মেরিটাইম লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার আবদুল্লাহ জহির বলেন, বিদেশি সংস্থা এসে এখানে বিনিয়োগ করবে, ইকুইপমেন্ট আনবে ও কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সে ক্ষেত্রে দেশে একটি বড় বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে, যা দেশের জন্য লাভ।
চট্টগ্রাম বন্দর প্রতি বছরে ৩২ লাখ কনটেইনারের পাশাপাশি ১১ কোটি মেট্রিক টন পণ্য হ্যান্ডলিং করে। আর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে পুরোপুরি অপারেশনে যাবে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল ও বে-টার্মিনাল। এতে অংশগ্রহণ থাকছে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি উন্নত দেশের। যে কারণে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে উঠবে আগামীর অর্থনৈতিক কেন্দ্র।