নিজস্ব প্রতিবেদক: নদীভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ১২ গ্রামের মানুষ। সুরমা নদীর ভাঙনে গত কয়েক বছরে কয়েকশ পরিবার তাদরে আশ্রয়স্থল হারিয়েছে। পাশপাশি বিলীন হয়েছে বিদ্যালয়, কবরস্থান, বাজার, মসজিদ ও আবাদি জমি। এখনো এসব গ্রামে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গ্রামের মানুষ সব সময় ভয়ে থাকেন, কখন তলিয়ে যায় ভিটেবাড়িসহ শেষ সম্বলটুকু।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের আমানিপুর গ্রামের মৎস্যজীবী জয়মোহন বর্মণ (৭০) ও দিলীপ বর্মণ (৬৫) বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার ভিটেমাটি সুরমা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ নিয়ে আমি দুবার ভাঙনের শিকার হলাম। কিছু করার নাই, আমাদের নদীপাড়ের মানুষগুলোর কপাল পোড়া। যত দিন বেঁচে আছি দেখি, আর কতবার বাড়ি ভাঙতে পারে নদী!’
ফেনারবাক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৪ হাজার ৫০০ জিও ব্যাগ ফেলে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে গ্রাম রক্ষার জন্য ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার প্রকল্প চলমান। দ্রুতই কাজ সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ৫৬ লাখ টাকার জিও ব্যাগ নদীতে ফেলে আপাতত আমানিপুর বাজার ও গ্রামটি রক্ষা করা হয়েছে। সংসদ সদস্যের প্রচেষ্টায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্টের মাধ্যমে এই অর্থবছরে ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার টেন্ডার হবে।
উল্লেখ্য, নদীভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের রামনগর, নূরপুর, সাচনাবাজার, জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কামলাবাজ, নয়াহালট, চানপুর, সংবাদপুর, লালপুর, লক্ষ্মীপুর, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের উত্তর কামলাবাজ, সাচনা গ্রাম, ফেনারবাক ইউনিয়নের শরীফপুর, রামপুর, গজারিয়া, আলীপুর, আমানীপুরসহ ১২টি গ্রাম। সারা বছরই চলমান থাকে এই নদী ভাঙন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতা আরও বাড়ে।