নিজস্ব প্রতিবেদক: চুরির ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও খোঁজ মেলেনি রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা পরিক্ষাকরন (মানযাচায় করন) মেশিনটি। এ ছাড়া চুরির ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
গত ১৪ জানুয়ারি রাতে যেকোনো সময় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে কয়লা পরিক্ষাকরন মেশিনটি কে বা কারা সরিয়ে ফেলে বা চুরি করে। পরেরদিন (১৫ জানুয়ারি) সকালে যন্ত্রটি খুঁজে না পেয়ে চুরি যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন কর্তৃপক্ষ। এর পর ৪৭ লাখ টাকা মূল্যের ওই মেশিনটি উদ্ধারে ১৬ জানুয়ারি রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও নিরাপত্তা) বাদী হয়ে রামপাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার ১১ দিন অতিবাহিত হলেও মেশিনটি উদ্ধার বা চুরির কাজে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
বাগেরহাটের রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন জানান, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিন চুরির ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। চুরির ঘটনা উৎঘাটনে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিঞ্জাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ মাসে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৬ এর সদস্যরা কয়েক দফায় অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের ২০ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। ওইসময় তাদের থেকে চুরি যাওয়া অর্ধকোটি টাকার মূল্যবান মালামাল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া গত ৯ মাসে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা ৩৩ জন চোরকে আটক করেছে। এবং তাদের কাছ থেকে ৫৩ লক্ষ টাকার মালামাল উদ্ধার করে।
মোংলার স্থানীয় বাসিন্দা মেহাম্মদ শাজাহান সিদ্দিকি মন্তব্য করেন, একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ মালামাল চুরি হচ্ছে। এমন একটি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে যদি চুরি হয় তাহলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কাজ কি?
নাম প্রকাশ না করা শর্তে প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, কয়লা পরীক্ষার যন্ত্রটি সাধারণ কোন মানুষের কাজে আসবে না। বা ছিচকে চোরের কাজও নয় এটি। বড় কোন চক্র বা কেন্দ্রের অভ্যন্তরে থাকা কেউ এই যন্ত্রটি সরানোর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া ল্যাব এলাকায় ২৪ ঘণ্টা ডিউটিতে লোক থাকেন। তাহলে মামলার এজাহারে কারো নাম না দেওয়ায় মনে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানো বা অবহেলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিরাপত্তায় আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য রয়েছে ১৫০ জন। সাধারণ আনসার রয়েছে ৩০ জন। পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন ১৭ জন। এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভেল এর সিকিউরিটি কর্মী রয়েছে ৭৮ জন। এবং জেরিন সিকিউরিটি সার্ভিসের সদস্য রয়েছে ১৮ জন।
বিভিন্ন পর্যায়ের এমন নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্বে থাকা এবং সীমানা প্রাচীরের মধ্য থেকে মালামাল চুরি হওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।