নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা চাই সব রাজনৈতিক দল আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, আমরা খেলেই জয়ী হতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ জানান, বিএনপি আসন্ন নির্বাচনকে কোনোভাবে প্রতিহতের অপচেষ্টা করলে জনগণই তাদের সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে।
নির্বাচন কোনো সরকার আয়োজন করে না জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকালীন সরকারের হাতে একটি পুলিশ কনস্টেবলও বদলি করার ক্ষমতা থাকে না। সবকিছুই ন্যস্ত থাকে নির্বাচন কমিশনের ওপর। পাকিস্তান ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বর্তমানে আর কোথাও নেই। এখন বিএনপি পাকিস্তানকে ফলো করছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কোনো আশা নেই দেখে তারা বাহানা খুঁজছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইভিএমে ভোট হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা সবকটি আসনে ইভিএমে ভোট চেয়েছিলাম। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে ইভিএম কেনার জন্য প্রায় এক মিলিয়ন ডলার খরচের চাহিদা দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে এত অর্থ খরচ করা ঠিক হবে না। তাই যে কয়টি আসনে ইভিএমে ভোট করা যায়, আমরা সে কয়টি আসনেই ইভিএমে ভোট করতে চাই।’
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি যে বাহানা করছে, সেগুলো তাদের বৈপ্লবিক স্বপ্ন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা বুঝতে পেরেছে, নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। ২০০৮ সালের নির্বাচন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বিএনপি পূর্ণশক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিল। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন বর্জন করে প্রতিহতের চেষ্টা করেছিল, গণতন্ত্রকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল, ৫০০ ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল, ভোটকেন্দ্রের সঙ্গে সেখানে রক্ষিত শিশু-কিশোরদের বইপত্রও পুড়িয়ে দিয়েছিল, কয়কজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। ২০১৮ সালে তারা (বিএনপি) ডান, বাম, অতি বাম, অতি ডান সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। তারা মাত্র ছয়টি আসন পেয়েছিল। তাদের কোনো আশা নেই। দেশের সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন তার বক্তব্যে বলেন, ‘রোববারের জনসভা উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ বছরে সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। এ জনসভা থেকে আমরা তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। জনসভায় বিপুল সংখ্যক নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরাও অংশ নেবেন। সবমিলিয়ে ৫ থেকে ৭ লাখ মানুষের সমাগম হবে এ জনসভায়।’
মেয়র লিটন আরও বলেন, ‘রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে বেশি লোকের জায়গা হবে না। সেজন্য আমরা এ মাঠের সঙ্গে ঈদগাহ মাঠটিকে সংযুক্ত করেছি। আশপাশের সিঅ্যান্ডবি মোড়, ফায়ার বিগ্রেড মোড় থেকে চারদিকে অন্তত ২০০টি মাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনসভায় আসতে চাওয়া অনেকে মাঠে ঢুকতে না পারলেও ১২টি প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে ও দেখতে পারবেন। এ ছাড়া দেড় লাখ বোতল পানি, টয়লেটসহ আনুষঙ্গিক সব ব্যবস্থা আমরা রেখেছি। ফলে রাজশাহীতে স্মরণকালের সবচেয়ে বিশাল জনসভা হবে এটি।’
উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, এমপি সাইফুজ্জামান শেখর, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আঞ্জুম মিতা, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবাল, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।