নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কোম্পানিটির এই ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর এজিএমে পাসও করা হয়েছে। এজিএমে পাস করার পর বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারদর সমন্বয় করা হয়েছে। কিন্তু আইন লঙ্গন হওয়ায় কোম্পানিটির ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড বিওতে পাঠানোর ছারপত্র দিচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এতে করে শেয়ারদর আরও কমে গেলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই বলছে, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকায় শেয়ারহোল্ডারদের অ্যাকাউন্টে শেয়ার জমা করার আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। কারণ উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকলে ২০১৯ সালের ২১ মে এবং ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারির দুই নির্দেশনার কারণে কোনো কোম্পানি স্টক শেয়ার ইস্যু করেও মূলধন বাড়াতে পারবে না।
কিন্তু গত অক্টোবর থেকে কনফিডেন্স সিমেন্টের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ধারণের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। এ কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ স্টক শেয়ার ইস্যুর অনুমোদনে ছাড়পত্র দেয়নি।
ডিএসই স্টক শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন না দিলেও গত ৫ ডিসেম্বরের ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের পর কনফিডেন্স সিমেন্টের শেয়ারদর ৫ শতাংশ স্টক শেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। এ কারণে শেয়ারটির দর সাড়ে ৯৩ টাকা থেকে কমে ৮৯ টাকায় নামে। এখন স্টক শেয়ার না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শেয়ারহোল্ডাররা। বিএসইসির নির্দেশনা লঙ্ঘন করে গত ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় ৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ৫ শতাংশ ক্যাশের পাশাপাশি ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়ার সুপারিশ করে পর্ষদ। এ সুপারিশের ভিত্তিতে গত ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এজিএমে তা পাসও হয়।
এজিএম শেষে গত ১২ জানুয়ারি ডিএসইর কাছে স্টক শেয়ার শেয়ারহোল্ডারদের অ্যাকাউন্টে পাঠাতে ছাড়পত্র পেতে আবেদন করেন কনফিডেন্স সিমেন্ট। তবে বিএসইসির নির্দেশনা লঙ্ঘন হওয়ায় গত ২৪ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে বোনাস শেয়ার ইস্যুর বিষয়ে ছাড়পত্র প্রদানে অপারগতা জানিয়ে ফিরতি চিঠি দেয় ডিএসই।
গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কনফিডেন্স সিমেন্টের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের মোট শেয়ার ৩০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ ছিল। সাবেক উদ্যোক্তা-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ হাসান গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুত্যুর পর পর্ষদ থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ায় এর পরিমাণ কমে ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশে নামে। শাহ মোহাম্মদ হাসানের শেয়ার ছিল ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। কথা ছিল শাহ মোহাম্মদ হাসানের উত্তরাধিকারীদের একজন সব শেয়ার নিয়ে পরিচালক হবেন। প্রক্রিয়াটি শেষ করতে তাঁরা দেরি করায় এ সমস্যা হয়েছে।
প্রয়াত শাহ মোহাম্মদ হাসানের ২৯ লাখ ১২ হাজার ৫৮৭টি শেয়ার তাঁর উত্তরসূরি স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে পেয়েছেন। এখন তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে তাঁদের ভাগে পাওয়া সব শেয়ার ছেলের নামে হস্তান্তর করছেন। ওই ছেলেকে কনফিডেন্স সিমেন্ট পরিচালক পদে নিয়ে আসতে চাচ্ছে। এ জন্য ৩০ জানুয়ারি পর্ষদ সভা আহ্বান করেছে।