নিজস্ব প্রতিবেদক: সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ব্যাংকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা বেড়েছে বাংলাদেশের মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, সুইস ব্যাংকের ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে ১ বছরে বেড়েছে ৫৫ শতাংশ অর্থ জমা। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বাংলাদেশের অর্থ। ২০২১ সালে ছিল ৮৩৪৫ কোটি টাকা ২০২০ সালে জমা হয় ৫ হাজার ২০৩ কোটি টাকা।
গতকাল বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে পীর ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের টাকা বিদেশে যায়। কানাডায় যায় সেখানে বেগমপাড়া হয়। সেখানে শুধু রাজনীতিবিদদের টাকা পাচার হয় তা নয়, সেখানে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা আছেন, তারাও বেগমপাড়া বানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ দেড় লাখ কোটি টাকা। সত্যিকার অর্থে ৪ লাখ কোটি বলে অনেকে মনে করছেন। মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে এত কোটি কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। এসব অর্থ আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে হবে। দুর্নীতির আখড়া এই সামান্য কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে।
দেশে বড় বড় প্রকল্পগুলোয় দুর্নীতি হচ্ছে এমন অভিযোগ করে পীর ফজলুর রহমান বলেন, দেশে অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। তবে বড় বড় প্রকল্প দিনের পর দিন সময় বাড়িয়ে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে দুর্নীতির সুযোগ ঘটেছে। এটা বন্ধ করতে পারলে দেশ আরও এগিয়ে যেত।
২০২২ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) ১৯ হাজার দুর্নীতির মামলার অভিযোগ করা হয়েছিল জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, দুদক মাত্র ৪ শতাংশ অভিযোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু দুদক যাদের অব্যাহতি দিয়েছিল হাইকোর্ট তাদের তলব করেছে। এটার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। সরকারি প্রকল্পের শুরুতে গলদ থাকে। সরকারি প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতি হচ্ছে। প্রায় সব প্রকল্পে মেয়াদ বাড়ানো ও ব্যয় বাড়ানোর ফলে দুর্নীতি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য খাতের তীব্র সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির সংসদ এই সদস্য বলেন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উচ্চ হারে খরচের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য খাতে ৬৯ শতাংশ ব্যয় হয় ব্যক্তির পকেট থেকে, যার পরিমাণ ৫৪ হাজার কোটি টাকা। এর জন্য তারা দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। আর সরকারের এত এত টাকার ওষুধ কী হচ্ছে, এখানে দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারছি না।
মাদক উচ্ছেদে আরও জোরালো তৎপরতার দাবি তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কেন্দ্র করে মাদক ব্যবসা বাড়ছে। রোহিঙ্গারা মাদক আনে কিন্তু তারা বিক্রি করতে পারে না। সেজন্য এ দেশের মাদকের গডফাদাররা তা বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। এমন গডফাদার ১ হাজার ১২২ জনের নাম এসেছে। এ সংখ্যাটা অনেক বেশি হবে। এসব গডফাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।