নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণের অংশ হিসেবে সরকার আগামী অর্থবছর থেকেই নির্দিষ্ট হারে রাজস্ব আদায় বাড়াবে। প্রথম বছর বাড়বে মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ০.৫ শতাংশ।
আইএমএফের রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ২০২৬ সালের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে ১০ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে এটি হবে ৫ শতাংশের কম।
প্রায় ৬ মাস ধরে চলা নানা আলোচনাসভার পর গত সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নির্বাহী বোর্ড। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সেই ঋণের প্রথম কিস্তি হিসাবে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।
আইএমএফের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাতে সংস্কারে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারের আগ্রহপত্র এবং অর্থনীতি ও আর্থিক নীতিসম্পর্কিত স্মারকেও এ বিষয়গুলো উল্লেখ আছে।
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য কর-নীতি এবং প্রশাসনিক সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার আগামী অর্থবছরের বাজেটেই সুর্নিদিষ্ট কিছু উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পরের দুই অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বাড়ানো হবে জিডিপির ০.৫ এবং ০.৭ শতাংশ হারে। সেই সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) একটি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৬০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা, এটি মোট বিতরণ করা ঋণের ২৩ শতাংশ। এ ছাড়া বিশেষায়িত তিন সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। যা তাদের মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ রয়েছে ৬৬ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা, যা তাদের মোট ঋণের ৬ দশমিক ২০ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, চলতি অর্থবছরে গ্যাস ও বিদ্যুতের ভর্তুকি বেড়ে জিডিপির ০.৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এ কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোকে ইতিবাচক পদক্ষেপ মনে করছে সংস্থাটি।
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করে আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার গ্যাস ও বিদ্যুতের ভর্তুকি ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার পন্থা খুঁজে বের করবে। জ্বালানি খাতে সময়ে সময়ে মূল্য সমন্বয়ের জন্য একটি কাঠামো ঠিক করা হবে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই।