লাইফস্টাইল ডেস্ক: মানব দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল কিডনি। কিডনির সমস্যার উপসর্গগুলি এতটাই মৃদু হয় যে, অসুখ গভীর না হলে বুঝে ওঠা যায় না। তবে কয়েকটি উপসর্গ অত্যন্ত সাধারণ বলে মনে হলেও, এগুলো লক্ষ্য করলে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া যায়।
মানবদেহে ছাঁকনির মতো কাজ করে কিডনি। কোনো কারণে এই অঙ্গটি আক্রান্ত হলে বা কিডনিতে কোনো রকম সংক্রমণ হলে শরীরে একের পর এক জটিল রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই কিডনির সমস্যা বা অসুখকে ‘নিঃশব্দ ঘাতক’ বলেই ব্যাখ্যা করে থাকেন চিকিৎসকরা।
কিডনিতে কোনো সমস্যা হলে তা ধরা পড়তে অনেকটা সময় লেগে যায়। জানুন কী কী লক্ষণ থাকলে আগে ভাগেই হতে হবে সতর্ক। লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই ডটকমের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী জেনে নেয়া যাক সেই লক্ষণগুলো।
১. সব সময় ক্লান্ত লাগা ২. ফোলাভাব ৩. প্রস্রাবে সমস্যা ৪. ঘুম না হওয়া এবং ৫. শ্বাসকষ্ট।
এবার জানবো বিস্তারিত-
১. সব সময় ক্লান্ত লাগা
নির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই সবসময় ক্লান্তি, দুর্বল অনুভব, ওজন দ্রুত কমে যাওয়া কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছে, মানবদেহে কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এছাড়া রক্ত পরিশুদ্ধ হয় না। ফলে রক্তে বিষাক্ত ও অপ্রয়োজনীয় উপাদান বাড়তে থাকে এবং আরও বেশি ক্লান্ত লাগে।
২. ফোলাভাব
মুখ ও চোখের চারপাশ হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে ফোলা অনুভব করলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, কিডনিতে সমস্যা হলে চোখের নিচে অথবা পায়ের গোড়ালি বা মুখের ফোলাভাব স্থায়ী হয়। সেটা এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ হলে, তা কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে। কিডনি যখন শরীর থেকে পানি বের করতে পারে না, তখন তা শরীরে জমে এই ফোলাভাব হয়।
৩. প্রস্রাবে সমস্যা
অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাব কমে যাওয়া দুটিই কিডনির সমস্যার লক্ষণ। শরীর থেকে পানি বের করা ছাড়াও পানি শুষে নেয়ার কাজও করে কিডনি। সেটি করতে না পারলে বেশি প্রস্রাব হয়ে থাকে। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য নির্গত করে। তবে কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে মূত্রনালিতে সমস্যা দেখা দেয়। বারবার মূত্রত্যাগ, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা মূত্রে অতিরিক্ত ফেনা হওয়াও কিডনির সমস্যার লক্ষণ। বিশেষত রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বার প্রস্রাব করতে হলে খুব সতর্ক হন।
৫. ঘুম না হওয়া
বিশেষজ্ঞরা বলছে, কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের রাতে ঘুম না আসার সমস্যা দেখা দেয়। কিডনি যখন শরীর থেকে পানি নিঃসরণ করতে পারে না, তখন কিছু পানি ফুসফুসে জমে যায়। সে কারণে ঘুমের সমস্যা হয়।
৪. শ্বাসকষ্ট
মানবদেহে তরল ভারসাম্যতা বজায় রাখে কিডনি। তবে কিডনিতে সমস্যা হলে ফুসফুসে তরল জমা হবে, ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। একে ফ্লুইড ওভারলোড বা হাইপারভোলেমিয়াও বলা হয়। অনেকে আবার এক্ষেত্রে বুকে ব্যথাও অনুভব করেন।