নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতার মাসে বিনা পারিশ্রমিকে ১৩০০তম কিডনি প্রতিস্থাপনের মাইলফলক স্পর্শ করবেন অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম। বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে এক রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে তিনি এই মহৎ কীর্তি গড়বেন বলে জানিয়েছেন।
স্বল্প মূল্যে দারিদ্রদের কিডনি প্রতিস্থাপন ও চিকিৎসার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সালে এ প্রতিষ্ঠান গড়েন কামরুল ইসলাম।
সরকারি হাসপাতালে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা নগণ্য, সেখানে সিকেডিতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। নির্ধারিত ন্যূনতম খরচ বাদে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য বিশেষজ্ঞ সার্জনের কোনো ফি নেন না ডা. কামরুল। রোগীদের ফলোআপ পরীক্ষার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ ও রিপোর্ট দেখার ফি-ও নেওয়া হয় না তার হাসপাতালে।
এ ছাড়া খরচ কমাতে কিডনি সংরক্ষণের জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করা এক ধরনের দামি তরলের বিকল্প তৈরি করেছেন ডা. কামরুল।
শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ১৯৮২ সালে ঢামেক থেকে ৮টি মেডিকেল কলেজের সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদকসহ এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস এবং ২০০০ সালে বিএসএমএমইউ থেকে ইউরোলজিতে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। উচ্চশিক্ষা নেন রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবার্গ থেকে।
অধ্যাপক কামরুল ১৯৯৩ সালে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। প্রথমবারের মতো সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজ করেন ২০০৭ সালে। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে প্রতিষ্ঠা করেন সিকেডি হাসপাতাল। চিকিৎসাবিদ্যায় অবদান রাখার জন্য ২০২২ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ডা. কামরুলের বাবা আমিনুল ইসলাম পাকশী ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করায় স্থানীয় রাজাকার ও বিহারিরা তাকে হত্যা করে।