নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে দিন দিন বেড়ে চলেছে জরায়ু ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা। ভ্যাকসিন না নেয়ার কারণে যে কারও হতে পারে এই রোগ। এমন প্রচারণা চালিয়ে গত ২ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ হাজার নারীকে জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে ভুয়া ভ্যাকসিন দিয়েছে একটি চক্র। ভুয়া এই ভ্যাকসিন এর ফলে যেমন একদিকে কিশোরীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে এই প্রতারক চক্র হাতিয়েও নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।
বুধবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিবির তেজগাঁও বিভাগ এই চক্রের ৫ সদস্যকে বিপুল পরিমাণ ভুয়া ওষুধ ও টিকা প্রদানের সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন মো. ফয়সাল আহম্মেদ, সাইফুল ইসলাম শিপন, মো. নুরুজ্জামান সাগর, মো. আল-আমিন, এবং মো. আতিকুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া ভ্যাকসিন তৈরির যন্ত্রপাতি এবং বিভিন্ন ওষুধ উদ্ধার করা হয়।
ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, চক্রটি ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে ‘জেনেভ্যাক-বি’ নামে আমদানিনিষিদ্ধ হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন দিয়ে বেড়াচ্ছে। এটি ভারত থেকে অবৈধ পথে মাত্র ৩৫০ টাকায় দেশে নিয়ে আসা হয়। এর পর এর একটি দিয়ে ১০টি নকল জরায়ু ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরি করা হয় এবং প্রতি ভ্যাকসিন আড়াই হাজার টাকা করে বিক্রি করে এই চক্রটি। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির প্রধান মো. হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, অবৈধপথে এই ভ্যাকসিন দেশে আনার পর বাড়িতে মজুত করতেন সাইফুল। পরে তা কেরানীগঞ্জের হিমেলের কারখানায় জরায়ু ক্যান্সারের টিকা কারভ্যারিক্সের নকল অ্যাম্পুলে ১ মিলি করে ভরা হতো। এই নকল ভ্যাকসিন ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশন, আল নুর ফাউন্ডেশন, দক্ষিণখান, পপুলার ভ্যাক্সিনেশন সেন্টারের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করা হয় ও বাজারজাত করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান ঢাকা, গাজীপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পিং করে এসব নকল ভ্যাকসিন দিয়ে যাচ্ছিল। জড়িতদের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
ভ্যাকসিন নিয়ে ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ইনফেকশন হয়েছে। ২ মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।