নিজস্ব প্রতিবেদক: আমানত এবং ঋণের যে ভারসাম্যপূর্ণ শৃঙ্খলা থাকা দরকার, সেটা ভেঙে গেছে ১৭ ব্যাংকে। আগ্রাসী ঋণ দিয়েছে প্রচলিত ধারা ও শরিয়াহভিত্তিক এসব ব্যাংক। এতে লঙ্ঘিত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সীমা। এ কারণে চরম তারল্য সংকটে পড়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমানতকারীদের জন্য বাড়তি ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে-এমন শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, ব্যাংকের ঋণশৃঙ্খলা ভেঙে যাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং বেনামি ঋণ। ব্যাংক খাতে সাম্প্রতিক সময়ে বড় অঙ্কের বেনামি ঋণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এভাবে চলতে থাকলে খাতটি ঝুঁকিতে পড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, প্রচলিত ধারার ব্যাংক ১০০ টাকার মধ্যে ৮৭ এবং ইসলামিধারার ব্যাংক ৯২ টাকা ঋণ দিতে পারে। এটিকে ব্যাংকিং পরিভাষায় অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) বা ঋণ-আমানত অনুপাত সীমা বলা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১-২৬ জানুয়ারি প্রচলিত ধারার ন্যাশনাল ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। অপর একটি ব্যাংকের উভয় ধারায় এডিআর দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৯৬ দশমিক ৬৪ ও ১০৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ৯১ দশমিক ১৭, ওয়ান ব্যাংকের ৮৯ এবং বিদেশি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের এডিআর ৮৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। এসব ব্যাংকে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া কমিউনিটি ব্যাংকের ৮৮ দশমিক ২৮, অপর একটি ব্যাংকের ৮৮ দশমিক ০৫ এবং আইএফআইসি ব্যাংকের এডিআর ৮৭ দশমিক ৪৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সীমার বাইরে বিনিয়োগের তালিকায় থাকা এক্সিম ব্যাংকের ১০০ দশমিক ২৮, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৯৬ দশমিক ২৮, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডোর ১৫৫ দশমিক ০৯ এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডোর এডিআর ১০৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এর বাইরে আরও পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের এডিআর যথাক্রমে ১০৪ দশমিক ৫৪, ১০২ দশমিক ২৭, ১০০ দশমিক ৪১, ৯৬ দশমিক ৮১ এবং ৯৩ দশমিক ০১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।