নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান হত্যা মামলার আলোচিত আসামী স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে দুবাইতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। দু’দিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি দুবাইতে জনসমক্ষে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় এই অভিযুক্তকে।
হঠাৎ করে তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে- তিনি এখন কোথায়? আরাভ খান ইন্টারপোলের রেড নোটিশের খবর কভার করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এমনকি আরাভ খান ফেসবুকেও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। গত তিনদিন ধরে তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। তবে তিনি দুবাই পুলিশের নজরদারিতে আছেন বলে জানা গেছে।
দুবাই প্রবাসী বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বলছেন, দুবাইতে আরভ খানের মালিকানাধীন আরভ জুয়েলার্স এখন তালা ও চাবির নিচে রয়েছে। ব্যবসা গুটিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। ইতিমধ্যে তার দোকান থেকে সমস্ত স্বর্ণালঙ্কার সরিয়েও নেওয়া হয়েছে।
তারা বলছেন, তিন দিন আগে তারা আরভ খানকে জনসম্মুখে হাঁটতে দেখেছেন, কিন্তু এখন তার কোনো হদিস নেই। তিনি কোথায় আছেন কেউ বলতে পারে না। তাদের আশঙ্কা, আরাভ খানের মার্কিন ও কানাডার ভিসা থাকায় যে কোনো সময় দুবাই ছেড়ে যেতে পারেন।
এদিকে আরাভ খানের ফেসবুক আইডিতে গিয়ে দেখা যায়, ২১ মার্চের পর তিনি আর কোনো নতুন পোস্ট করেননি। এমনকি লাইভেও আসেননি।
ওই রাতে সাড়ে আটটার দিকে শেষ পোস্টটি করেন তিনি। সেই পোস্টে আরভ লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় দেশবাসী আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন সহায় হন।’ এটিই এখন পর্যন্ত তার শেষ পোস্ট।
এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেন, আরভ খান দুবাই পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন। ইন্টারপোলের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।
এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, আরাভ খান পালাতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, কোনো অপরাধী বিদেশে গিয়ে পরিচয় প্রকাশ করলে তার পালানোর কোনো সুযোগ নেই। তিনি (আরভ খান) রাজনৈতিক আশ্রয়ে না থাকলে পলাতক থাকতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৯ জুলাই গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার উলুখোলা এলাকার একটি জঙ্গল থেকে পুলিশ পরিদর্শক মামুনের পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের আসামি হয়ে দেশ ছেড়েছেন আরভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম। তিনি দেশ ছেড়ে প্রথমে ভারতে যান। কয়েক বছর কলকাতার বস্তিতে থাকার পর তিনি আরভ খানের নামে একটি ভুয়া ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করে দুবাই চলে যান। এখন সে দুবাইয়ের বড় সোনা ব্যবসায়ী। তিনি সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এবং দুবাইতে 'আরাভ জুয়েলার্স' নামে একটি সোনার দোকান খোলেন। সেখানে বাংলাদেশের কয়েকজন তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।