নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যের বিপণন সংস্থা থেকে শুরু করে আর্থিক সংস্থা, শিক্ষা পরিষেবা, মাছ, চিপের দোকানসহ ৬০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে পাঁচ দিনের পরিবর্তে চার দিন অফিস সময় চালু হয়েছে।
এই পরিবর্তন এখনো পাইলট প্রকল্পের আওতায় চলছে। গত ফেব্রুয়ারির জরিপে দেখা গেছে, চার দিন অফিস সময় চালু করার ফলাফল অত্যন্ত ইতিবাচক হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর ৯২ শতাংশ নিয়োগকর্তা বলছেন, তাঁরা এই প্রকল্পের পর সংক্ষিপ্তভাবে এই কর্মসপ্তাহ চালিয়ে যাবেন। আর ৩০ শতাংশ বলেন, তাঁরা এই পরিবর্তন স্থায়ী করবেন।
এসব অফিসের প্রায় ৩ হাজার কর্মীর মধ্যে ৭১ শতাংশ বলেন, চার দিন অফিস চালু হওয়ায় তাঁদের চাপের মাত্রা কমে এসেছে। শারীরিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতারও উন্নতি হয়েছে।
যদিও পাইলট প্রকল্পে থাকা শতভাগ সংস্থা শিগগির মডেলটি বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়নি। তবে চার দিনের কর্মসপ্তাহের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সাধারণ সাফল্য নিয়োগকর্তাকে এটাই নির্দেশ করে যে প্রথাগত ৯টা থেকে ৫টার অফিস সময় কাজ করছে না।
অ্যাবিগাইল মার্কস, নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির ফিউচার অব ওয়ার্ক বিষয়ের অধ্যাপক এই প্রকল্পে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঐক্যমত্যে নিয়ে এসেছে অলাভজনক সংস্থা ফোর ডে উইক গ্লোবাল।
অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সপ্তাহে চার দিন অফিস চালু হওয়ায় তাদের কর্মীরা পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে পেরেছেন। নানা শখ পূরণ করাসহ আরও বেশি নিজের যত্ন নিতে পেরেছেন।
যুক্তরাজ্যের বিপণন সংস্থা থেকে শুরু করে আর্থিক সংস্থা, শিক্ষা পরিষেবা, মাছ, চিপের দোকানসহ ৬০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এসব অফিসের প্রায় ৩ হাজার কর্মীর মধ্যে ৭১ শতাংশ বলেন, চার দিন অফিস চালু হওয়ায় তাঁদের চাপের মাত্রা কমে এসেছে। শারীরিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতারও উন্নতি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের গেটসহেডের প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমার-অ্যাডভাইস হেল্পলাইন সিটিজেনস অ্যাডভাইসের প্রধান নির্বাহী অ্যালিসন ডান বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা মহামারি ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকটের পর তাঁদের কাজের তীব্রতা বাড়িয়েছে। কর্মক্ষেত্রে চাপ একটি সমস্যা ছিল। তাই সপ্তাহে চার দিনের অফিস তাঁদের কিছুটা চাপ কমিয়ে দিয়েছে। আমরা কর্মীদের তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে বাড়তি দিন কাটাতে, বনে বেড়াতে এবং শখ পূরণে সহায়তা করতে পেরেছি।’
পাইলট প্রকল্পে অংশ নেওয়া নিয়োগকর্তারা আরও বলেন, সংক্ষিপ্ত কর্মসপ্তাহ কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ও আউটপুট বাড়িয়ে দেয়। লিডস-ভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি ট্রিও মিডিয়ার সিইও ক্লেয়ার ড্যানিয়েলস বলেন, যখন কর্মীরা অতিরিক্ত সাপ্তাহিক ছুটি উপভোগ করেন, তখন তা আরও ভালো কর্মজীবনের ভারসাম্য তৈরি করে। এতে কর্মীরা আরও সুখী ও কম চাপে থাকেন। আর সুখী মানুষ কর্মক্ষেত্রে আরও ভালো কাজ করে।
তবে এত ইতিবাচক ফলাফল সত্ত্বেও, এই পাইলট প্রকল্পটি সব প্রতিষ্ঠানের জন্য সমানভাবে কাজ করেনি। কিছু প্রতিষ্ঠান শুরু করলেও পরে এই প্রকল্প থেকে সরে আসে। বেশ কয়েকটি সংস্থা এখনও চার দিনের কর্ম সপ্তাহকে পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারেনি।
তাই বর্তমানে চার দিনের কর্মসপ্তাহ কিছু কোম্পানির জন্য স্থায়ীভাবে চালু রাখা একটি পরীক্ষা হতে পারে। এটি সবার জন্য বাস্তবসম্মত না–ও হতে পারে বলে মনে করেন অ্যাবিগাইল।