নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজানে সারা দিন রোজা রাখার পর সবারই চাহিদা থাকে ইফতারে এক টুকরো আপেল বা তরমুজ, এক কোষ কমলা কিংবা একমুঠো আনারের। ইফতারে এই খাবারগুলো যে পরিতৃপ্তি এনে দেয়, তা অন্যকিছুতে পাওয়া যায় না। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পেয়ারা ছাড়া বাকিসবকিছুই মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
তাই দিনশেষে ইফতারে ফলের চাহিদা থাকলেও মনভরে ফল খেতে পারেন না মধ্যবিত্তরা। তাছাড়া এলাকাভেদে একই মানের ফলের মূল্যেরও পরিবর্তন হয়।
রমজানে প্রত্যেকের অতিপ্রিয় একটি ফল হলো তরমুজ। আড়ত থেকে পিস হিসাবে কেনা হলেও খুচরা বাজারে এই ফলটি বিক্রি হয় কেজি দরে। রাজধানীর বাদামতলী ও মিরপুরে ফলের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে বর্তমানে ৫ থেকে সাড়ে ৫ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকায়।
সেই তরমুজ রাজধানীর ফল বিক্রেতারা বর্তমানে বিক্রি করছেন এলাকাভেদে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৬০ টাকায়। যে তরমুজ পুরান ঢাকা বা মোহাম্মদপুরে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, একই তরমুজ বারিধারা বা গুলশানে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা দরে। চেইন শপগুলোয় দাম অনেক ক্ষেত্রে আরও বেশি।
এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, এখন আমরা তরমুজে খুব বেশি লাভ করতে পারি না। কারণ, আড়তে তরমুজের দাম বেড়ে গেছে। গরম বাড়লে এ দাম সামনের দিনগুলোয় আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে যে দামে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে, তখন এ দামে পাওয়া যাবে না।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একই মানের ফল একেক এলাকায় একেক দামে বিক্রি হচ্ছে, বিশেষ করে আমদানি করা ফল। চাইনিজ আপেল এলাকাভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার সবুজ আপেলসহ আরও কয়েক পদের আপেল বাজারে পাওয়া যায়, যেগুলো বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩৫০ টাকা কেজি দরে। কমলার দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ২২০-৩০০ টাকা। সেদিক থেকে আঙুরের দাম তুলনামূলক কিছুটা কম। এক কেজি আঙুর ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ড্রাগন ফল। মজাদার কিউই ফলের দাম আকারভেদে ৮০০-১১০০ টাকা কেজি। স্ট্রবেরি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকা কেজিতে। আনারের কেজি আকারভেদে ৪০০-৬০০ টাকা কেজি।
রমজানে দেশি ফলে মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় কলা। কিন্তু সেই কলার দামও হাতের নাগালের বাইরে। চিনিচম্পা, বাংলা বা সবরি, যে কলাই হোক না কেন ৮০ টাকা ডজন দামের কমে কোনো কলা নেই। আনারসের দাম ৬০ থেকে ১২০ টাকা পিস।
ছোট পাকা বেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকায়। বড় বেল প্রতি পিস ১৫০-২০০ টাকা। মাঝারি সাইজের একটি ডাবের দামও এখন ১০০ টাকা। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় ভ্যানে খুব ছোট আকারের চাইনিজ কমলা বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। এ কমলার দাম রাখা হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০-২২০ টাকা। ফলের মধ্যে পেয়ারার দামই কিছুটা কম। ৬০-৮০ টাকা কেজিতে কিনতে পারছেন সবাই।