নিজস্ব প্রতিবেদক: শিশু বক্তা হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে ঢাকা ও গাজীপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চারটি মামলায় শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৯ মার্চ) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে মাদানীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী মোল্লা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলার শুনানি শেষে হাইকোর্ট এক আদেশে বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, চার্জশিট ও সাক্ষ্য-প্রমাণ যাচাই-বাছাই করে জামিন দিতে আমরা রাজি নই।
আদালত বলেন, তবে রফিকুল ইসলাম মাদানী যদি রাষ্ট্র ও সমাজের পরিপন্থী এবং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী, ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য বা বক্তব্য না দেওয়ার জন্য হলফনামা আকারে একটি হলফনামা দেন, তাহলে আমরা তার জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারি।
গত বছরের ২৭ জুন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি সেলিম হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে হলফনামা ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে যায়।
সম্প্রতি কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে হলফনামায় স্বাক্ষর করেন রফিকুল ইসলাম মাদানী। তিনি হলফনামায় লিখেছেন, তিনি কোনো ওয়াজ মাহফিলে রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী এবং প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দেবেন না। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এবং জনমনে সংঘাত সৃষ্টি হয় এমন কোনো বক্তব্য আমি ওয়াজ মাহফিলে দেব না।
এই প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম মাদানীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী মোল্লা জানান, কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে রফিকুল ইসলাম মাদানী ইতিমধ্যে হলফনামায় স্বাক্ষর করেছেন।
মাদানীর আইনজীবী বলেন, ভবিষ্যতে তিনি সমাজবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেবেন না। আমরা শিগগিরই হাইকোর্টে এই আবেদন করব এবং সব মামলায় জামিন চাইব। আশা করছি সব মামলায় তিনি জামিনে মুক্তি পাবেন।
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে রফিকুলকে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নেত্রকোনার বাসা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
ওই বছরের ৮ এপ্রিল গাজীপুরের গাছা থানায় ‘শিশুবাক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। র্যাবের নায়েক সুবেদার আব্দুল খালেক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের বাসন এবং রাজধানীর মতিঝিল ও তেজগাঁও থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
মামলায় তার বিরুদ্ধে ভয়াবহ মিথ্যা, ভয় দেখিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার অপরাধে সহায়তা ও সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গাজীপুরের টেকনাগপাড়া এলাকায় মো. এই ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে বাসন থানায় মামলা করেন। একই অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল ও তেজগাঁও থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ।