ঢাকা, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
Sharenews24

কোভিড-১৯

৩৫ লাখ মানুষকে সচেতন করেছে এফপিএবি

২০২৩ নভেম্বর ২১ ১১:০৮:২৩
৩৫ লাখ মানুষকে সচেতন করেছে এফপিএবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৩৫ লাখ মানুষকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সেবা প্রদান করেছে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (এফপিএবি)।

বিপুল এই জনগোষ্ঠীর মাঝে মাস্ক বিতরণ, অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা, সচেতনতামূলক সভা, সেমিনার আয়োজন এবং পরামর্শ সহায়তা দিয়েছে এনজিওটি, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। দেশের বিভন্ন স্থানে এফপিএবি-র ২১টি ক্লিনিক হয়ে উঠেছে করোনা পরামর্শ সেন্টার। সংস্থাটির কর্মসূচি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

খোজ নিয়ে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাধারণ মানুষকে করোনা পরীক্ষা এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সুবিধা সম্পর্কে সচেতন করেছি আমরা। জেলা পর্যায়ে এ কাজে আমাদের সহযোগিতা করেছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, এফপিএবির স্থানীয় সদস্য, মসজিদের ইমাম, সাংবাদিক ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা।

সংস্থাটির সেবা গ্রহণকারীদের একজন নোয়াখালী পৌরসভার মাইজদী বাজার সংলগ্ন মাস্টার পাড়ার বাসিন্দা মো. আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, গত বছরের জানুয়ারিতে আমাদের স্থানীয় স্কুলে এফপিএবির করোনা সচেতনতামূলক সভায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিছুদিন পরেই স্ত্রী-কন্যাসহ অসুস্থ হয়ে পড়ি। স্থানীয় ফার্মেসির ওষুধ খেয়ে আমি সুস্থ হলেও স্ত্রী-কন্যার জ্বর সেরে উঠছিল না। পরে এফপিএবির নোয়াখালী শাখার পরামর্শ ও তাদের হাসপাতালের সেবা নিয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা সুস্থ হয়ে ওঠে।

আরেক সেবাগ্রহীতা দিনাজপুরের বাসিন্দা মো. আলী মুন্না বলেন, করোনা আক্রান্তের পর এক পর্যায়ে আমার অক্সিজেন লেভেল ৯০ শতাংশের নিচে নেমে যায়। সে সময় এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে এফপিএবি।

এফপিএবির অ্যাডভোকেসি সভা থেকেই করোনা সংক্রমণের বিষয়টি বুঝতে পেরে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ফরিদপুরের কুঠিবাড়ী কমলাপুর গ্রামের কাজী মুরাদের ছেলে কাজী রেদওয়ান আরাফ।

এফপিএবি-র তথ্যমতে, অনেক সমস্যার মুখোমুখি হলেও লকডাউনের সময়েও সাহসের সঙ্গে কাজ করেছেন আমাদের কর্মীরা। সেবা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা সুন্দর ও সহজ হয়েছে এফপিএবির ২০টি শাখা ক্লিনিক, আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম, অন্যান্য যন্ত্রপাতি, স্ক্রিনিং প্রটোকল, কর্মী সুরক্ষা নীতি, কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ এবং সুরক্ষাসামগ্রীর কারণে।

দেশে পরিবার পরিকল্পনা আন্দোলনের পথপ্রদর্শক হিসেবে পরিচিত এফপিএবির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫৩ সালে। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এর প্রতিষ্ঠা করেন সমাজকর্মী অধ্যাপক ড. হুমায়রা সাঈদ।

পরিবার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্যহীনতা, অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ, সহিংসতা ও বৈষম্য থেকে মুক্ত যৌনজীবন উপভোগের জন্য যুব-জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে এফপিএবি। তবে করোনা মহামারির শুরু থেকেই কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সেবা দিয়ে আসছে সংস্থাটি।

গত ১২ নভেম্বর এফপিএবির জাতীয় কার্যালয়ে কোভিড-১৯ টেস্ট এন্ড ট্রিট এডভোকেসি ইন এলএমআইসি প্রকল্পের এডভোকেসি সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আবদুল্লাহ হারুন। সভা সভাপতিত্ত করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. হেলাল উদ্দিন ভূঞা।

তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের ২৩টি জেলায় ২১টি পূর্ণাঙ্গ ক্লিনিক, ২টি বিশেষ কর্ম ইউনিট, ৭২টি ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এফডিসি), ২১টি তারার মেলা (যুববান্ধব ক্লিনিক) ও সিবিডি কার্যক্রম পরিচালনা করছে এফপিএবি। এর মাধ্যমে ৫০ লাখ মানুষ পেয়েছেন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, যার ৫৩ শতাংশই যুব জনগোষ্ঠী।

কোভিড-১৯ থেকে এখনো পুরোপুরি মুক্ত হয়নি। তুলনামূলক কম হলেও এখনো করোনা আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ, গর্ভবতী নারী, দুর্গম এলাকা ও দ্বীপে বসবাসকারী, ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ডায়াবেটিস, ফুসফুস, কিডনি, ক্যান্সার আক্রান্ত এবং টিকাবিহীন মানুষ এখনো কোভিড ঝুঁকির বাইরে নন। তাই কোভিড থেকে বাঁচতে সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প নেই।

শেয়ারনিউজ, ২১ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে