ঢাকা, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪
Sharenews24

টাইম ট্রাভেল কি আসলেই সম্ভব? শেয়ারমার্কেট প্রলয়কারী এন্ড্রু কার্লসনের মতে সম্ভব

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১৪ ২৩:৫৩:০৮
টাইম ট্রাভেল কি আসলেই সম্ভব? শেয়ারমার্কেট প্রলয়কারী এন্ড্রু কার্লসনের মতে সম্ভব

আলমের খান: সময়টা মার্চ ২০০৩, এফবিআই এন্ড্রু কার্লসন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। বেচারা লোকটি গ্রেফতার হন শুধুই তার অতিপ্রসন্ন ভাগ্যের কারণে। মাত্র ৮০০ ডলার শেয়ারমার্কেটে বিনিয়োগ করে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের মালিক বনে যান তিনি।

এই ৮০০ ডলারকে ১২৬ দফা রিইনভেস্ট করে এন্ড্রু। বিস্ময়করভাবে ১২৬ বার‌ই তার বিনিয়োগ সফলতার মুখ দেখে। এই অতি সুপ্রসন্ন ভাগ্যই তাকে কারাগারের দরজা দেখিয়ে দেয়।

এফবিআইর ধারণা জন্মে কোনো শেয়ারমার্কেট জালিয়াতির সাথে যুক্ত এই ব্যক্তি। তবে এফবিআইর জিজ্ঞাসাবাদে এন্ড্রু যেসব তথ্য দেয় তা ছিল অভাবনীয়।

তার মতে সে ২০০ বছর ভবিষ্যৎ থেকে এসেছে। তিনি জানতেন ঠিক কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে। ফলশ্রতিতে তার পক্ষে সফল না হওয়ার কোনো কারণ ছিল না।

তিনি আরো বিস্ময়কর কিছু কথাবার্তা বলেন। তাকে যদি শাস্তি না দেওয়া হয় তাহলে এইডস এর প্রতিকারক কিভাবে বানাতে হবে তা বলে দিবেন। এছাড়াও ওসামা বিন লাদেনকে কোথায় পাওয়া যাবে সেই তথ্যও তার কাছে আছে। সবমিলিয়ে এসব শুনে এফবিআইর কর্মকর্তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন।

এর কিছু সময় পর অজ্ঞাত কোনো এক ব্যক্তি এসে এন্ড্রুর জামিন করিয়ে দেন। মাস তিনেক পর আদালতে তার হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল।

তবে জামিনের পর এন্ড্রুকে আর কখনোই দেখা যায়নি। এমনকি ২০০২ সালের আগ পর্যন্ত তার কোনো রেকর্ডও ছিল অনুপস্থিত।

এই ঘটনা তৎকালীন সময় বিশ্বব্যাপী চরম আলোরণ সৃষ্টি করে। বিশ্বের বিখ্যাত প্রায় সব নিউজ পোর্টালই নিউজটি কাভার করে। তবে এফবিআই খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেনি।

এফবিআইর কর্মকাণ্ড বিশ্বব্যাপী ছড়ানো। নিজেদের মিশনের নিরাপত্তার স্বার্থে তারা নিজেদের কোনো কেস ডিটেলস জনসমক্ষে আনে না। এই ক্ষেত্রেও হয়েছে তাই, খবরের সত্যতা তাদের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।

এক ঊর্ধ্বতন এফবিআই কর্মকর্তা মন্তব্য করেছিলেন, 'হয়তো এই নামের কাউকে আমরা কোনো এক দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করেছি। তবে শেয়ার মার্কেটের যে ঘটনা বলছেন খুব সম্ভবত এটি সত্য নয়'। এই ঘটনাটি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

বর্তমানে টাইম ট্রাভেল সিনেমা,‌ গল্পতেই মানানসই। বর্তমান সময়ের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে টাইম ট্রাভেল বাস্তবতার মুখ দেখবে এই কথা বলা দুরূহ। আইনস্টাইনের আগে তো সময়ের আগে পিছে যাওয়ার কোনো বৈজ্ঞানিক ধারণাই ছিল না।

তবে আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিয়েলিটিভিটি প্রথমবারের মতো মানব সভ্যতাকে সময় ভ্রমণের স্বপ্ন দেখায়। বিগত সময়ে ধারণা করা হতো সময় সকল স্থানে একই গতিতে প্রবাহমান। মহাকাশের সকল স্থানেই পৃথিবীর মতোই এর গতি এক।

আইনস্টাইন সময়কে অনেকটা নদীর প্রবাহের সাথে তুলনা করেছেন। নদীর প্রবাহ একেক জায়গায় একেক সময় একেক গতিতে প্রবাহমান। কখনো ধীরগতি সম্পন্ন, আবার কখনো দ্রুত গতির। আইনস্টাইন নিজের এই থিওরির সত্যতা পরবর্তীতে গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করে গিয়েছিলেন। এই থিওরি সময় ভ্রমণের অনেকগুলো দ্বার উন্মুক্ত করেছে। তবে বাস্তবিকভাবে যেটি সত্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেটি নিয়েই কথা বলা যাক। কোনো নির্দিষ্ট বস্তু যদি আলোর চেয়ে দ্রুত গতিতে চলমান থাকতে পারে তাহলে বস্তুটি সময়ের বেড়াজাল ডিঙিয়ে ভবিষ্যতে যেতে পারবে।

তবে এত দ্রুত গতিসম্পন্ন কোনো বস্তু আবিষ্কার করতে মানুষের কত সময় লাগবে তা বলা মুশকিল। আদৌ এটি সম্ভব কিনা তাও জোর গলায় বলা যাচ্ছে না। আলোর গতি সেকেন্ডে এক লক্ষ ছাপান্ন হাজার মাইল। অপরদিকে মানব তৈরি দ্রুততম বস্তু রকেটের প্রতি সেকেন্ডের স্পিড সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটারে উঠতে পারে। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে এখনো টাইম ট্রাভেলের স্বপ্ন দেখাটা অনেকটাই দিবা স্বপ্ন দেখার মতো। এছাড়াও এই ধরনের কোনো বস্তু তৈরি করতে বৈজ্ঞানিকরা সক্ষম হলেও তা পুড়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। এত বেশি গতির চাপ নিতে পারে এমন কোনো ধাতু বর্তমান পৃথিবীতে পাওয়া যায়নি।

সব মিলিয়ে টাইম ট্রাভেলটিকে তাই বিজ্ঞানীরা কল্পনা রূপেই দেখতে ভালোবাসেন। আমরাও সেটিকে সেভাবেই দেখি। এটি নিয়ে গল্প উপন্যাস পড়তে ভালোবাসি, সিনেমা দেখতে ভালোবাসি।

তবে মাঝে মাঝে এই ধরনের কিছু ঘটনা আমাদের তাক লাগিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় জগতটা বিস্ময় দ্বারা ভরপুর। তাই ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে কেই বা জানে।

আলমের/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে