নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা, মন্ত্রী, এমপি, বিচারপতি, সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হতে থাকেন এবং কারাগারে বন্দী হতে থাকেন।

বিলাসী জীবন ভোগের পর এসব নেতা, মন্ত্রী, এমপি, বিচারপতি, সরকারি কর্মকর্তারা যারা কারাগারে আছেন, তাদের বেশিরভাগই ডিভিশন পেয়েছেন। ফলে বিশেষ খাবার, ব্যক্তিগত কাজের লোক ও পত্রিকা পাচ্ছেন তারা নিয়মিত।

শেখ হাসিনা সরকারের যাদের কথায় সরকার চলতো এবং যাদের লাইফস্টাইল ছিল বিলাসিতার পরিপূণ, তারা সবাই একাকী জীবন-যাপন করছেন। এখন প্রশ্ন, জেলখানায় সেই তাদের দিনকাল এখন কেমন কাটছে?

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, বন্দিদের বেশিরভাগের ঠাঁই হয়েছে কেরানীগঞ্জ কারাগারে। বিভিন্ন কারাগারে ডিভিশন পেয়েছেন ৪৭ জন। যাদের মধ্যে আছেন, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, দীপু মনি, জুনাইদ আহমেদ পলক, রমেশ চন্দ্র সেন, এম এ মান্নানসহ আরও অনেকে।

বাদ যাননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও। আওয়ামী সরকারের গুম খুনের মাস্টারমাইন্ড জিয়াউল হাসান পেয়েছেন প্রথম সারির ডিভিশন। এ তালিকায় আছেন সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, এডিসি কাফী ও এক সময়ের প্রতাবশালী র‍্যাব কর্মকর্তা সোহাইল।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকও পেয়েছেন ডিভিশন। ডিভিশন পেয়েছেন দুর্নীতিবাজ সচিব শাহ কামালও, যিনি নগদ কোটি কোটি টাকা নিজের কাছে রেখেছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ডিভিশন পাওয়া আসামিরা থাকেন আলাদা একটি রুমে। যেখানে থাকে একটি বিছানা, কাঁথা বালিশ, টেবিল, চেয়ার ও ফ্যান। রয়েছে ব্যক্তিগত টয়লেটের সুবিধাও। প্রতিদিন ২টি পত্রিকা দেয়া হয় তাদের।

ডিবিশন পাওয়া ভিআইপিদের খাবারের তালিকায় সকালে থাকে রুটি, সবজি ও ডিম। দুপুরে ভাত-মাছ অথবা মাংস ও ডাল। রাতে ভাত, মাছ ও সবজি। কারা অধিদপ্তরের এআইজি জান্নাত উল ফরহাদ বলেন, অন্যান্য বন্দিদের মতো একই পরিমাণের খাবার পাচ্ছেন তারা। শুধু মাছ-মাংস দু’বেলা হয়।

তারা মাসে একবার দেখা করতে পারেন পরিবারের সঙ্গে। সপ্তাহে একদিন ১০ টাকার বিনিময়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারেন ১০ মিনিট। এ ছাড়া তাদের দেখভাল করেন একজন কারাকর্মী। সার্বক্ষণিক নজরদারি ছাড়াও প্রতিটি রুমের দায়িত্বে থাকেন কারারক্ষী।

মামুন/