ঢাকা, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বৈদেশিক লেনদেনে সুখবর দিয়ে শুরু নতুন অর্থবছর

২০২৪ অক্টোবর ১০ ১২:৪১:৪৯
বৈদেশিক লেনদেনে সুখবর দিয়ে শুরু নতুন অর্থবছর

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলো বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য বা ব্যালান্স অব পেমেন্ট। বৈদেশিক লেনদেনে সুখবর দিয়ে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শুরু হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। দেশে আমদানি কমায় পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতির পরিমাণও কমেছে। আলোচ্য সময়ে চলতি হিসাবের উদ্বৃত্ত ১১১ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭৫ কোটি ৪০ লাখ (২.৭৫ বিলিয়ন) ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯.৫৩ শতাংশ কম।

আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩০৪ কোটি ৪০ লাখ (৩.০৪ বিলিয়ন) ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ি, জুলাই-আগস্ট সময়ে ৯৯১ কোটি ৪০ লাখ (৯.৯১ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছেন দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১.২ শতাংশ কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই দুই মাসে ১০.০৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল। অন্যদিকে জুলাই-আগস্ট সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৭১৬ কোটি (৭.১৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২.৫ শতাংশ বেশি।

গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ৬.৯৮ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। এই হিসাবেই চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমে ২.৭৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২২.৪৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৭.৩৮ বিলিয়ন ডলার।

বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ৬.৫১ বিলিয়ন ডলারের বড় ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছর।

এখাতে সুখবর হচ্ছে, ব্যালান্স অব পেমেন্টে উদ্বৃত্ত নিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছর। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ৬১ কোটি ডলারের ঘাটতি ছিল।

আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে আর্থিক হিসাবে (ফিন্যানশিয়াল অ্যাকাউন্ট) উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ৪.৫৪ বিলিয়ন ডলার। তবে ঘাটতি নিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছর। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) আর্থিক হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৩৩ কোটি ৭০ লাখ (১.৩৩ বিলিয়ন) ডলার।

সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতি কিছুটা কমেছে। জুলাই-আগস্ট সময়ে এই সূচকে ঘাটতি ছিল ১.৪ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ১.৬৯ বিলিয়ন ডলার।

তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্সে বড় সুখবর দিয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) চেয়ে ১০.৬১ শতাংশ বেশি। সেই ইতিবাচক ধারা চলতি অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। দুই মাসে অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট সময়ে ৪.৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫.৮ শতাংশ বেশি।

এরই মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের রেমিট্যান্সের তথ্যও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ৬.৫৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৩.৩৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই-আগস্ট সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। মূলত বীমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।

বিদেশি বিনিয়োগেও সুখবর রয়েছে। সংকটের মধ্যেও দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। জুলাই-আগস্ট সময়ে মোট ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ডলারের এফডিআই এসেছে দেশে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩.৮০ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে ৬০ কোটি ৯০ লাখ ডলার এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে