ঢাকা, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

আড়িপাতার সুযোগ রেখেই স্টারলিংককে আনতে চায় সরকার

২০২৪ অক্টোবর ৩০ ১০:৪৭:০২
আড়িপাতার সুযোগ রেখেই স্টারলিংককে আনতে চায় সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : আড়িপাতার সুযোগ রেখেই দেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালু করতে বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংককে দেশে আনতে চায় সরকার। সম্প্রতি স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকও করেছে।

তিন বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করার আগ্রহ দেখাচ্ছে বৈশ্বিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। প্রচলিত ইন্টারনেট সেবা মুঠোফোন টাওয়ার ও সাবমেরিন কেব্‌লনির্ভর হলেও স্টারলিংক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট–সেবা দেয়। এ কারণে পৃথিবীর দুর্গম অঞ্চলেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। বিশ্বের প্রায় ৫০টির বেশি দেশে স্টারলিংকের কার্যক্রম রয়েছে।

মঙ্গালবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) তাদের ওয়েবসাইটে একটি খসড়া গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। বিটিআরসি প্রকাশিত প্রস্তাবিত গাইডলাইনটির নাম হচ্ছে, ‘নন–জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর’। আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত এই গাইডলাইনের ওপর মতামত দেওয়া যাবে।

জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে যেভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল, তখন অনেকেই স্টারলিংকের পক্ষে ‘হ্যাশট্যাগ’ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিটিআরসির খসড়ায় অভ্যুত্থান বিবেচনায় নতুন কোনো বিষয় নেই।

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী এনটিএমসিকে প্রয়োজন অনুসারে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত গেটওয়েতে প্রবেশাধিকার দিতে হবে। লাইসেন্সধারী এনটিএমসিকে আড়িপাতার সিস্টেমে যেকোনো প্রয়োজনীয় ডেটা প্রদানের ব্যবস্থা রাখবে।

নাশকতামূলক বা বেআইনি কার্যকলাপ শনাক্ত ও পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবে কমিশন। সময়ে সময়ে কমিশনের কাছে প্রাসঙ্গিক তথ্য জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেবে। ধ্বংসাত্মক বা বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত এমন সাবস্ক্রিপশন থাকলে তা শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করার ব্যবস্থা থাকতে হবে লাইসেন্সধারীর।

লাইসেন্সধারী বিটিআরসি ও এনটিএমসির নির্দেশনা অনুযায়ী ইন্টারনেট প্রোটোকল ডিটেইল রেকর্ড (আইপিডিআর), লেনদেনের বিস্তারিত রেকর্ড (টিডিআর), কল ডিটেইলড রেকর্ড (সিডিআর) এক বছরের জন্য সংরক্ষণ করবে।

আইনানুগ আড়িপাতার পদ্ধতি থাকতে হবে এবং সরকারের এ সংক্রান্ত নীতি মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া কমিশন জাতীয় নিরাপত্তা বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সহ বেশ কিছু কারণে লাইসেন্সধারীকে পূর্ব নোটিশ ফ্রিকোয়েন্সির নিয়োগ বাতিল করতে পারবে।

লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানকে টেলিকম আইন ২০০১, ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফি আইন ১৯৩৩, টেলিগ্রাফ আইন ১৮৮৫, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ (পরিবর্তিত সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩) মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া কমিশন দ্বারা সময়ে সময়ে আদেশ, নীতি, সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া সরকারের সংসদ দ্বারা যে কোনো অধ্যাদেশ, রুলস ও নীতি মেনে চলতে হবে।

স্যাটেলাইট ইন্টারনেট–সেবা হলেও দেশের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে ব্যান্ডউইডথ নিতে হবে। খসড়ায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ডেটা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য লাইসেন্সধারীর গেটওয়ে আইআইজির সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, লাইসেন্সধারী সেবা দেওয়ার আগে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে অন্তত একটি গেটওয়ে সিস্টেম স্থাপন করবেন। তবে কমিশন লাইসেন্সধারীকে বাড়তি গেটওয়ে স্থাপন করতে উৎসাহিত করে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বসবাসকারী ব্যবহারকারীর কার্যক্রম ও পরিবেশন এই দেশের স্থানীয় গেটওয়ের মাধ্যমে হতে হবে।

বিটিআরসির গাইডলাইনে আরও বলা আছে, বাংলাদেশে ব্যবসা করতে হলে স্যাটেলাইট কোম্পানিকে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে (আরজেএসসি) নিবন্ধিত হতে হবে। বিদেশি প্রতিষ্ঠান হলে সরকারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) নীতি মানতে হবে।

এস/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে