ঢাকা, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

পতনের আগে দুই কারণে হাসিনার সঙ্গে সাহাবুদ্দিনের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ ছিল

২০২৪ নভেম্বর ১২ ১৮:৫৯:০০
পতনের আগে দুই কারণে হাসিনার সঙ্গে সাহাবুদ্দিনের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। অন্তত দুটি ইস্যুতে দুজনের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

দুই ইস্যুর মধ্যে একটি হলো, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগ এবং অন্যটি হলো, শ্রম আইন সংশোধন। এ দুই বিষয়ে বঙ্গভবন আর গণভবনের মধ্যে হঠাৎ দুরুত্ব তৈরি হয়। শুরু হয় চিঠি চালাচালি।

রীতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে গেলে দেশে ফেরার পর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা যায় চীন ও ভারত সফরের পর। সম্পর্কের অবনতি এমনটাই ঘটেছিল যে, চীন ও ভারত সফরের পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনের দিকে পা-ই বাড়াননি।

এমনই যখন অবস্থা, তখনই বিচারক নিয়োগের প্রশ্নটি সামনে আসে। গণভবন বা আইন মন্ত্রণালয়ের তৎপরতা দেখে প্রেসিডেন্ট রীতিমতো বিরক্ত হন। ১৮ এপ্রিল ২০২৪ প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে সামগ্রিকতা নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া উল্লেখ রয়েছে। নিয়োগের পদ্ধতি স্পষ্ট না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে প্রথাগতভাবে নিয়োগ হয়ে আসছে। বিষয়টি লিখিত না থাকলেও আলোচনাক্রমে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পরামর্শ করার নিয়ম চালু আছে। প্রেসিডেন্টই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

চিঠিতে বলা হয়, এই নিয়ম ভঙ্গ করে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বঙ্গভবনে একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। সারসংক্ষেপ বহনকারী ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের জন্য চাপ দিতে থাকেন।

এতে বিরক্ত হয়ে প্রেসিডেন্ট পাল্টা একটি চিঠি পাঠান সই না করেই। এতে তিনি বলেন, যেভাবে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে তাতে প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘আমি কিছুই জানি না, অথচ আমাকেই চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে হবে। প্রচলিত নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রেসিডেন্টকেই পুতুল বানানো হয়েছে। শুধুমাত্র আমার ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম কেন? দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া উপেক্ষা করার কী অর্থ আছে’।

চিঠিতে বলা হয়, আইনমন্ত্রীও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন মনে করেননি। সবমিলিয়ে প্রেসিডেন্ট ব্যথিত হন-এটাও উল্লেখ ছিল চিঠিতে। এই চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রীর দপ্তরে।

অপরদিকে, প্রচলিত শ্রম আইন নিয়েও ভিন্নমত দেখা দেয়। আলোচনা না করে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। এতে প্রেসিডেন্ট মনঃক্ষুণ্ন হন।

এতে করেই বঙ্গভবন ও গণভবনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। সম্ভবত এসব কারণেই হাসিনা ৫ আগস্ট ক্ষমতা ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনেও কোনো যোগাযোগ করেননি। সূত্র: জনতার চোখ

মামুন/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে